অমর্ত্য সেন। —ফাইল চিত্র।
কোন কোন নথির ভিত্তিতে অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ নোটিস দিয়েছিল বিশ্বভারতী, তা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বীরভূম জেলা ও দায়রা আদালত। শুক্রবার জেলা আদালতে সেই সংক্রান্ত নথি জমা দিয়েছিল বিশ্বভারতী৷ শনিবার সেই নথির প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার দাবি জানিয়ে আদালতে আবেদন করেছেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবীরা।
যদিও সেই আবেদনের বিরোধিতা করেন বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস। অমর্ত্য সেনের আইনজীবীরা এই নথি হাতে পাবেন কি না, সেই বিষয়ে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর আদালত রায় রায় দিতে পারে বলে আইনজীবী সূত্রের খবর। বিশ্বভারতীর আইনজীবীর দাবি, “জেলা ও দায়রা আদালত লোয়ার কোর্ট রেকর্ড বা এলসিআর চেয়ে পাঠিয়েছিল। বিশ্বভারতী তা পাঠিয়েও দিয়েছে। অমর্ত্য সেনের আইনজীবীরা একটি পিটিশন করে বলেছেন, এলসিআর তাদের দিতে হবে। কিন্তু, এটা নিময়বিরুদ্ধ।”
অন্য দিকে, অমর্ত্য সেনের আইনজীবীদের পক্ষে বিমান চৌধুরী বলেন, “আদালতে যে এলসিআর জমা পড়েছে, তার একটি প্রতিলিপি পাওয়ার জন্য আমরা দরখাস্ত করেছিলাম। সেই আবেদন মঞ্জুর হবে না বাতিল হবে, তা ২১ সেপ্টেম্বরের সিদ্ধান্তে জানা যাবে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৯ এপ্রিল বিশ্বভারতীর সম্পত্তি আধিকারিক তথা যুগ্ম কর্মসচিব অশোক মাহাতো একটি চিঠি দেন অমর্ত্য সেনকে। ওই চিঠিতে ৬ মে-র মধ্যে শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়ির উত্তর পশ্চিম কোণ থেকে ‘অতিরিক্ত’ ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ৬ মে-এর মধ্যে ওই পরিমাণ জমি খালি না-করলে প্রয়োজনে ‘বলপ্রয়োগের’ হুঁশিয়ারিও ছিল নোটিসে। এর পরেই বীরভূম জেলা ও দায়রা আদালতে এই উচ্ছেদ নোটিসের উপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন অমর্ত্যের আইনজীবীরা। বেশ কয়েক মাস ধরে সেই বিষয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে সওয়াল জবাব চলে। বিশ্বভারতীর সম্পত্তি আধিকারিকের এক্তিয়ার নিয়ে এবং ওই ১৩ ডেসিমাল জমির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের আইনজীবীরা।
শেষ পর্যন্ত দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে গত ৮ অগস্ট উচ্ছেদের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেন জেলা ও দায়রা বিচারক সুদেষ্ণা দে চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি কোন কোন নথির উপরে ভিত্তি করে এমন নোটিস জারি করা হয়েছিল, তাও বিশ্বভারতীর কাছ থেকে চেয়ে পাঠিয়েছিল আদালত। শুক্রবার সেই নথিই জমা করা হয় বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, শতাধিক পাতার এই নথিতে ১৯৪৩ সালে জমি লিজ দেওয়ার সময় থেকে শুরু করে ২০২৩ সালে উচ্ছেদের নির্দেশ পাঠানো পর্যন্ত সমস্ত রেকর্ড, নোটিস, নির্দেশ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কিছু দলিল ও চিঠিপত্র রয়েছে।