প্রতীকী ছবি।
পুরুলিয়ার ঝালদার জমি নিয়ে অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অভিযোগকারীরা।
‘ঝালদা জমি রক্ষা কমিটি’-র কয়েকজন সদস্য শুক্রবার পুরুলিয়া জেলা পরিষদ ভবনে গিয়ে সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে ওই তদন্ত কমিটি নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়ে আসেন। তাঁরা লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসনের সামনে দিনের পর দিন ধরে সরকারি জমি বেদখল করে পুকুরের একাংশ ভরাট করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে শতাধিক গাছ কেটে পাচার করে দেওয়া হল। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে একাধিক বার মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েও কাজ না হওয়ায়, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে তাঁরা নালিশ জানিয়েছেন।
সোমবার ‘ঝালদা জমি রক্ষা কমিটি’-র নামে এসডিও থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে গণস্বাক্ষর করা অভিযোগপত্র জমা পড়ে। তাতে দাবি করা হয়, ঝালদা শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবাড়ির সামনে প্রায় এক হাজার ডেসিমিল জমি রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় তিনশো ডেসিমিল রায়তি। বাকিটা খাস জমি। ওই খাস জমি বেদখল করে নানা কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ। বুধবার সুজয়বাবু চার জনের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সোমবার থেকে ওই জমি মাপজোক করার কথা।
এ দিন কমিটির অন্যতম সদস্য চিরঞ্জীব চন্দ্র, অসিত কান্দু অভিযোগ করেন, ‘‘তদন্ত কমিটিতে যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁদের অনেককেই আমরা মৌখিক ভাবে জমি বেদখলের অভিযোগ বারবার জানিয়েছি। লাভ হয়নি। তাই তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে ঝালদা জমি রক্ষা কমিটির যে কোনও দু’জন সদস্যকে তদন্ত কমিটিতে রাখতে হবে।’’
তদন্ত কমিটির সদস্যদের চার জনের মধ্যে ঝালদা ১ বিএলএলআরও পার্থ সন্ন্যাসী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তাই কোনও মন্তব্য করব না।’’ কমিটির অন্য সদস্য ঝালদার পুরপ্রশাসক তৃণমূলের প্রদীপ কর্মকার বলেন, ‘‘যা অবস্থা, তাতে দেখা যাচ্ছে নিরপেক্ষ তদন্ত হলেও তা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে।’’ উল্টে তাঁর দাবি, ‘‘আসলে কিছু লোক জমি রক্ষা কমিটির নামে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছেন বলে এমন কথা বলছেন।’’
তবে সভাধিপতি বলেন, ‘‘অভিযোগকারীরা তাঁদের দাবি আমাকে জানিয়েছেন। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের সঙ্গে আলোচনা করে মহকুমা স্তরের এক জন সরকারি আধিকারিককে মাথায় রেখে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তাই অভিযোগকারীরা তদন্ত শুরুর আগেই যদি তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সেটা ঠিক নয়।’’ তদন্ত কমিটিতে অভিযোগকারীদের কাউকে রাখা সম্ভব নয় বলেও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এক বার দাবি মানলে, আবার কেউ এমন দাবি তুলতে পারেন।’’