লজ্জা দেবেন না। বাঁকুড়ার চকবাজারে ক্রেতার দেওয়া হাজার টাকার নোট প্রত্যাখ্যান মাছ বিক্রেতার।
রেলের খুচরো
আদ্রায় ট্রেন থেকে নামলেন পুরুলিয়ার যুবক বিপ্লব দে। যাবেন বাঁকুড়া। ১টা নাগাদ ট্রেন আসবে। বিপ্লব কাউন্টারে টিকিটের লাইনে গিয়ে দাঁড়ালেন যখন, সবে সাড়ে বারোটা বাজে। পাঁচশো টাকার একটা নোট এগিয়ে দিতেই কাউন্টারের ওপারে বসা রেলকর্মী ফিরিয়ে দিলেন। কিন্তু টিকিট কাউন্টারে রেলকর্মী জানান, খুচরো নেই। পাঁচশো টাকার নোট ভাঙাতে স্টেশনের বাইরের বাজারে দোকানে দোকানে ছুটে বেড়িয়েছেন বিপ্লব। কোনও লাভ হয়নি। ১টার ট্রেন বেরিয়ে গেল চোখের সামনে দিয়ে। বিপ্লব বলেন, ‘‘জরুরি কাজ ছিল। দু’টোর মধ্যে বাঁকুড়া পৌঁছতে হতো।’’ কিন্তু রেলের টিকিট কাটতে তো পাঁচশো বা হাজার টাকার নোট এই ক’দিন ব্যবহার করা যাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কর্তব্যরত ওই রেলকর্মী বলেন, ‘‘সকাল কাউন্টার খোলার পরে সবাই পাঁচশো টাকার নোট দিয়েছেন। বেলা ১১টার মধ্যেই আমাদের কাছে যা খুচরো ছিল, সব শেষ। কিছুই করার নেই।’’ বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর স্টেশনেও একই সমস্যা দেখা গিয়েছে। বিষ্ণুপুর স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে এক কর্মী বলেন, “সবাই ৫০০ টাকা ভাঙিয়ে দেওয়ার আবদার করছেন। আমাদের কাছে তো নেই! অনেকেই সমস্যাটা বুঝছেন, আবার অনেকে ঝগড়া জুড়ে দিচ্ছেন। সারাদিন ধরে অশান্তি চলছে।’’ তবে পুরুলিয়া স্টেশনে সংরক্ষিত টিকিটের ফাঁকা কাউন্টারে এ দিন অনেকেই খুচরো পেয়েছেন।
তেল তো ছুতো
বেলা ১১টা নাগাদ রঘুনাথপুর এলাকায় নিজের পেট্রোল পাম্পে ঢুকতেই চেঁচামেচি কানে এল সুকুমার মণ্ডলের। কী ব্যাপার? কর্মীরা জানালেন, পাঁচশো টাকার নোট নিয়ে এসে এক যুবক পঞ্চাশ টাকার তেল চাইছেন। এ দিকে একশো টাকার নোট বাড়ন্ত। জেলার অধিকাংশ পাম্পেই ছবিটা কমবেশি একই। পাম্পের কর্মীরা জানান, অধিকাংশ লোকজনই পঞ্চাশ বা একশো টাকার তেল ভরানোর ছুতোয় আসলে পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট ভাঙাতে আসছেন। যার জেরে এ দিন বেলা ১২টার পরে অধিকাংশ পেট্রোল পাম্পে খুচরো শেষ হয়ে গিয়েছে। মানবাজারের একটি পাম্পের এক কর্মীর অনুযোগ, ‘‘অনেকে মানিব্যাগে খুচরো থাকলেও দিচ্ছেন না।’’ পুরুলিয়ার লধুড়কার একটি পেট্রোল পাম্পে জ্বালানি ভরতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন পলমা গ্রামের বিপ্লব মণ্ডল। ট্যাক্সিস্ট্যান্ড -সহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় পাম্পে পাম্পে ঘুরেছেন। সর্বত্রই বলা হয়েছে, নিলে পুরো পাঁচশো টাকারই তেল নিতে হবে। হুড়ার পাম্পটির মালিক মূলচাঁদ জৈন বলেন, ‘‘যা খুচরো ছিল তা দিয়ে দুপুর অবধি টেনেছি।’’ জেলার অনেক পেট্রোল পাম্পেই এ দিন ৫০০ বা হাজার টাকার খুচরো নেই বলে নোটিশ ঝোলানো হয়েছে।
পুরুলিয়ার হুড়ার লধুড়কা মোড়ে পেট্রোল পাম্পে পাঁচশো বা হাজার টাকার নোট নিয়ে গেলে তেল মিলছে না।—অভিজিৎ সিংহ ও প্রদীপ মাহাতো।
ওষুধের মূল্য
হাসপাতাল আর হাসপাতালের ওষুধের দোকানে পাঁচশো বা হাজার টাকার নোট লেনদেন করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ভোগান্তি এড়াতে পারলেন না রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকানে খুচরো ফুরিয়েছে। বাঁকুড়া মেডিক্যালে পাঁচশো টাকার নোট নিয়ে ন্যায্য মূল্যে ওষুধ কিনতে গিয়ে ফিরেছেন সিমলাপালের সাহাজাদ আলি, রাইপুরের মধুসূদন গরাইরা। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের নায্যমূল্যের ওষুধের দোকানেও সমস্যায় পড়েছেন অনেকে। ওই দোকানের কর্মী উমারচন মাহাতো এবং বাঁকুড়া মেডিক্যালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধ দোকানের ক্যাশিয়ার সঞ্জীবকুমার মাহাতো বলেন, “সকাল থেকেই সবাই বড় নোট নিয়ে আসছেন। যতক্ষণ খুচরো ছিল দিয়েছি। কিন্তু আমরাই বা কী করতে পারি!’’
স্টকিস্টদের গোঁ
আদ্রার বিভিন্ন দোকান থেকে ফরমায়েশ নিয়ে আসানসোলের স্টকিস্টদের থেকে ওষুধ এনে দেন কিছু ছোট ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাঁচশো আর হাজার টাকার নোটে আগাম নিয়েছিলেন। বুধবার দুপুরে ওষুধের দোকানে ফোন করে তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন, নোট অচল। স্টকিস্টরা নিতে চাইছেন না। ছোট ব্যবসায়ী সুরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যখন টাকা নিয়েছিলাম তখনও কিছু ঘোষণা হয়নি। হঠাৎ সব ওলটপালট হয়ে গেল।’’ আদ্রার কয়েকটি ওষুধের দোকানের মালিকেরা জানান, এখন মুখ চেনা থাকলে ধারে ওষুধ দিচ্ছেন। কিন্তু খুচরোর মতো অনেক মজুত ওষুধও ফুরনোর পথে।
একশোয় মজুরি
শ্রমিকেরা পাঁচশো টাকার নোটে মজুরি নেবেন না। অগত্যা কাজই বন্ধ করে দিতে হল রাজমিস্ত্রি রন্টু শেখকে। রঘুনাথপুর এলাকায় একটি গুদাম বানানোর কাজ পেয়েছেন তিনি। তিনশো টাকা দিনমজুরিতে শ্রমিকেরা কাজ করেন তাঁর কাছে। বুধবার কাজে এসে আগেভাগেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনটে কড়কড়ে একশো টাকার নোট চাই। মোট পাঁচ হাজার টাকা অনেক চেষ্টা করেও ভাঙাতে না পেরে বাধ্য হয়ে হাল ছাড়তে হয়েছে রন্টুকে। নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত অনেকেরই অবস্থা হয়েছে রন্টুর মতো। তাঁরা বলেন, ‘‘বাজারে ধার বাকি করে কাজ চালাই। বড্ড মুশকিল হল।’’
জাল নোট
ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন প্রায় পৌনে ১০টা। লোকপুরের কদমাপাড়া এলাকার যুবক ঘনশ্যাম সহিসের মোবাইলে এক বন্ধু ফোন করে জানালেন, এলাকার একটি এটিএম থেকে শুধু জাল নোট বেরোচ্ছে! জাল নোট আগে কখনও দেখেননি ঘনশ্যাম। শুনেই তড়িঘড়ি ছুটেছিলেন। কিন্তু গিয়ে যেটা দেখলেন, লম্বা লাইন। অবাক হয়ে এক পরিচিত ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে জিজ্ঞাসা করলেন, “জাল নোট কোথায় দাদা?” উত্তর এল, “পকেটে পাঁচশ টাকার নোট আছে? বের করে দেখে নিন।’’ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলেন ঘনশ্যাম। পরে সব শুনে পকেট থেকে এটিএম কার্ড বের করে কাচুমাচু মুখে নিজেও দাঁড়ালেন লাইনের শেষে।
যার জন্য
স্বামী বরাবরের বেহিসাবি। আপদে বিপদে কী হয় ভেবে মানিব্যাগ থেকে কখনও পাঁচশো, কখনও হাজার টাকার নোট সরিয়ে একটু একটু করে জমিয়েছিলেন বড়জোড়ার এক বধূ। এক ঘোষণায় তিনি পড়েছেন মস্ত বিপাকে। অনেক ভেবে শেষ পর্যন্ত কর্তার কাছে গিয়ে সমস্তটা খুলে বলেছেন। আর তাই নিয়ে সংসারে অশান্তি। স্বামীর বক্তব্য, ‘‘প্রায় তিরিশ হাজার টাকা হবে সব মিলিয়ে। এখন ব্যাঙ্কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে জমা করতে হবে। কী ঝকমারি!’’ এ দিকে গজগজ করে স্ত্রী প্রবাদ আওড়াচ্ছেন, ‘‘যার জন্য চুরি করি সেই বলে চোর!’’
নিরাপত্তার দায়
মঙ্গলবার সকাল থেকেই ফাঁকাই ছিল বাঁকুড়ার কাটজুড়িডাঙার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম। মোতায়েন নিরাপত্তা রক্ষী সারাদিন মাছি তাড়িয়ে সন্ধ্যেয় এলাকার বন্ধুদের সঙ্গে একটু চা খেতে বেরিয়েছিলেন। ফিরে তো চক্ষু চড়কগাছ। দূর থেকেই দেখেন এটিএম-এর সামনে বিরাট জটলা। হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে একজনকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘কোনও ঝামেলা হয়েছে নাকি?’’ জানলেন, ঝামেলাই বটে! পাঁচশো আর হাজার টাকার নোট সব বাতিল হতে বসেছে। হাঁফ ছেড়ে নিরাপত্তা কর্মীটি বলেন, ‘‘যাক বাবা, বাঁচা গেল!’’ অবশ্য, তারপরে মাঝরাত পর্যন্ত ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয়েছে তাঁকে।
বাঁকুড়ায় মুদির দোকানে ঝুলছে নোটিস।
ভাড়া নেই
এরই মাঝে কেন্দ্রের নোট বাতিলের ফলে পর্যটন মরসুমের শুরুতেই সমস্যায় পড়েছেন বিষ্ণুপুরের হোটেল ব্যবসায়ীরা। বিষ্ণুপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ও শহরের একটি হোটেলের মালিক অসিতকুমার চন্দ্র জানান, ধানবাদের জনা চারেক প্রবীণ পর্যটক তাঁর হোটেলে উঠেছিলেন কিছু দিন আগে। বুধবার তাঁরা হোটেল ছাড়েন। কারও কাছেই কোনও ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ছিল না। হাতে নগদ যা ছিল সবই পাঁচশো আর হাজার টাকায়। বাধ্য হয়ে তাঁকে সেই নোটই নিতে হয়েছে তাঁকে। তার পরেই এক দল পর্যটক এসেছিলেন ঘরের খোঁজে। ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড না থাকায় তাঁদের ফিরিয়ে দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
তিব্বতে সচল
শীত আসতেই শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বসেছে শীতের পোশাকের বাজার। এলাকায় সবাই বলেন, ‘তিব্বত মার্কেট’। সেই বাজারে এ দিন পাঁচশো আর হাজার টাকার নোটের অবাধ লেনদেন হয়েছে। হুড়া ব্লকের পিঁড়রা গ্রামের বাসিন্দা মুক্তা বাস্কে সোয়েটার কিনে ফেরার পথে জানালেন, বড় নোট নিয়ে গেলে কোনও বিক্রেতাই কিছু বলছেন না। রোশনি ছেত্রী নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘‘অচল তো নয়। ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা করে দেব।’’
মাছেও ছাড়
আগের রাতেই জেনে গিয়েছিলেন। কিন্তু উপায় না থাকায় পাঁচশো টাকার নোট নিয়েই মাছ বাজারে গিয়েছিলেন পেশায় আইনজীবী পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা বাসুদেব বক্সী। কোনও সমস্যাই হয়নি। ভাঙানিও পেয়েছেন। একই ছবি কাশীপুরের মাছ বাজারেও। কাশীপুরের মাছ বিক্রেতা আঘনি কৈবর্তর কথায়, ‘‘দেখি মহাজন যদি না নেয়, কাল থেকে আর নেব না।’’ তবে বাঁকুড়ার বেশ কয়েকটি বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের একাংশ এ দিন খদ্দেরদের দেওয়া পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট ফিরিয়ে দিয়েছেন।
ঘুষের বোঝা
সকাল তখন ৭টা। মানবাজার পোস্ট অফিস মোড়ে চায়ের দোকানে আড্ডা জমে উঠেছে। কাছে গিয়ে দেখা গেল এক প্রৌঢ় সবাইকে নিজের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে চা খাওয়াচ্ছেন। আর হাত পা নেড়ে সবাইকে বোঝাচ্ছেন, এই পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিল করে কত কাজের কাজ হয়েছে। ব্যাপারখানা কী? একটু আড়ালে ডেকে নিয়ে গিয়ে বয়স্ক ওই শিক্ষক বললেন, ‘‘ভাইপোর প্রাইমারি চাকরির জন্য সুপারিশ করতে এক নেতার কাছে গিয়েছিলাম। অনেক টাকা চেয়েছিল। দিতে পারিনি। কিন্তু টাকা তুলেও কী লাভ হল! এখন তো ব্যাঙ্কেও জমা করতে পারবেন না। ভাবতেই মজা লাগছে।’’
না জেনে
বুধবার বান্দোয়ান বাজারে সাপ্তাহিক হাট বসে। জঙ্গল থেকে ফালি কাঠ এনে বিক্রি করেন অনেকে। এ দিন ভাল দামেই বিক্রিবাটা হল। কিন্তু টাকা নিয়ে মুদির দোকানে গিয়ে মুশকিলে পড়লেন কাঠ বিক্রেতারা। তাঁদের অনেকেই আগে জানতেন না পাঁচশো টাকার নোট রাতারাতি অচল হয়ে গিয়েছে। ফলে নিয়েছেন। শেষে শতকরা দশ টাকা গচ্ছা দিয়ে পাঁচশো টাকার নোট ভাঙাতে হল তাঁদের।
মুশকিলে কংগ্রেস
বুধবার পুরুলিয়ায় জেলা পরিষদ অভিযানের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। সভায় যাওয়ার জন্য পুরুলিয়া-আদ্রা রুটের একটি ছোট বাস ভাড়া করেছিলেন কাশীপুরের কিছু সমর্থক। দেরি হয়ে যাচ্ছে। এ দিকে বাসের দেখা নেই। ড্রাইভারকে ফোন করে হম্বিতম্বি করতেই জবাব আসে, ‘‘যে টাকা দিয়ে বায়না করেছিলেন সেগুলো তো পাঁচশোর নোট। এখন পেট্রোল পাম্পে নিচ্ছে না। কী করে যাব?’’
মাছি তা়ড়ানো
ঝালদা বাসস্ট্যান্ডে খাবারের দোকান চালান সাধন দত্ত। চপ, কচুরি, সব্জি সাজিয়ে বসে এ দিন মাছি তাড়াতে হয়েছে তাঁকে। খদ্দের থেকেও নেই। সবার কাছেই বড় নোট। হুড়ার লালপুর মোড়ে স্টেশনারি দোকানের মালিক কানাইলাল দত্ত বা ঝালদা ১ ব্লকের ইচাগ গ্রামের প্রেমচাঁদ মাহাতোর সমস্যাটা আবার আলাদা। পাইকারি জিনিসপত্র যে কিনবেন, কেউই পাঁচশো বা হাজার টাকার নোট নিচ্ছেন না। জেলার দোকানদারদের একাংশের বক্তব্য, ‘‘আমাদের থেকে কেউ বড় নোট নিচ্ছেন না, তাই আমরাও নিচ্ছি না।’’
সহযোগিতা
পাঁচশো টাকার নোট ঘাড় থেকে নামাতে মরিয়া সবাই। দোকানে এসে অনুরোধ, হম্বিতম্বি— সবই চলছে সকাল থেকে। বাধ্য হয়ে বাঁকুড়া শহরের কালীতলা এলাকায় জনার্দন দত্ত মুদিখানা দোকানে নোটিশ ঝুলিয়েছেন— ‘‘পাঁচশো ও হাজার টাকার নোট না দিয়ে সহযোগিতা করুন।’’ এক রসিক ক্রেতার মন্তব্য, ‘‘এত দিন ধার না চাইতে বলত, এখন আবার টাকা না দিতে বলছে। কী দিনকাল পড়ল রে বাবা!’’
কানা মামা
মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে এ দিন বিশেষ ভিড় ছিল না। নানা শিল্পসামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসা ব্যবসায়ীরাও বিশেষ ক্রেতা পাননি। অনেকেই বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের থেকে পাঁচশো টাকার নোট নিয়ে নিয়েছেন। ছিন্নমস্তা মন্দিরের সামনে পোড়ামাটির জিনিসপত্র বিক্রি করেন পুতুল নাগ। তিনি বলেন, “নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল। কী আর করা যাবে।’’
তথ্য: প্রশান্ত পাল, সমীর দত্ত, শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল ও রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।