Stop Early marriage

বয়সের আগে বিয়ে নয়, বিজ্ঞপ্তি লহরিয়ার মন্দিরে

অযোধ্যা পাহাড়ের ঠিক নীচে রয়েছে মন্দিরটি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এখানকার দেবতা খুবই জাগ্রত। বছরভর ভিড় থাকে পুণ্যার্থীদের। বিশেষ করে শ্রাবণে মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:০৯
Share:

বাল্যবিবাহ বন্ধের উদ্যোগ মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র

নির্ধারিত বয়সের আগে বিয়ে নয়। পাত্রের বয়স কমপক্ষে ২১ বছর ও পাত্রীর কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। না, কোনও সরকারি অফিসের বাইরে সচেতন-বার্তা দেওয়া ফ্লেক্স নয়। এমন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির লহরিয়া শিবমন্দিরে। নাবালিকা বিয়ে রুখতে এমন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। বিডিও (বাঘমুণ্ডি) দেবরাজ ঘোষও বলেন, “প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। বাকি মন্দিরগুলি যেখানে বিয়ের চল আছে, সেখানেও একই ভাবে কড়াকড়ি হওয়া উচিত।”

Advertisement

অযোধ্যা পাহাড়ের ঠিক নীচে রয়েছে মন্দিরটি। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এখানকার দেবতা খুবই জাগ্রত। বছরভর ভিড় থাকে পুণ্যার্থীদের। বিশেষ করে শ্রাবণে মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে। এর সঙ্গে বিয়ের মরসুমে কার্যত বিয়ের ধুম লাগে মন্দিরে। লাগোয়া এলাকা তো বটে, ঝাড়খণ্ড থেকেও অনেকে আসেন বলে দাবি মন্দির কর্তৃপক্ষের। মন্দির চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, পাত্র-পাত্রীর বয়সের উল্লেখ ছাড়াও বিয়ের সময়ে উভয়ের বয়সের প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে বলে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এমনকি, বিয়ের সময়ে হাজির থাকতে হবে দু’পক্ষের লোকজনকেও।

কেন এই বিজ্ঞপ্তি? লহরিয়া শিবপুজো কমিটির ডিরেক্টর অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিবারণচন্দ্র মাহাতো বলেন, “সংখ্যায় কম হলেও অতীতে বয়স ভাঁড়িয়ে অল্প বয়সে বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে কমিটিতে আলোচনার পরে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।” কমিটির এক জনের আরও দাবি, এখনও অনেকে বিয়ের জন্য আসেন। তবে বিজ্ঞপ্তি দেখার পরে কেউ কেউ পিছিয়ে যান।

Advertisement

ঘটনা হল, পুরুলিয়ার যে কয়েকটি ব্লকে নাবালিকা বিয়ের ঘটনা সামনে আসে, বাঘমুণ্ডি তার অন্যতম। জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর মনীষা নন্দী বলেন, “খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন এ ভাবে এগিয়ে এলে নাবালিকা বিয়ে রোখার কাজ সহজ হবে।” নাবালিকা বিয়ে বন্ধে দৃষ্টান্ত তৈরি করে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া বীণা কালিন্দীর বাড়ি এই ব্লকে। তিনি বলেন, “এ নিয়ে আগেই আমরা লড়াই শুরু করেছিলাম। সমাজে এ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে দেখে ভাল লাগছে।” এ ছাড়া, অল্প বয়সে বিয়ে রোখার বার্তা নিয়ে এক সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ানো বাঘমুণ্ডির বুড়দা গ্রামের অক্ষয় ভগৎও বলেন, “ভাল পদক্ষেপ। বাকিদেরও তা অনুসরণ করা উচিত।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement