গ্রামে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামবাসীর আবেদনে সাড়া দিয়ে স্বনির্ভরতার দিশা দিতে গ্রামে গেল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসন।
বিষ্ণুপুর ব্লকের মড়ার পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত খড়িগাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলতে ২১টি পরিবার। দিনমজুরি করে সংসার চলে। সঙ্গে মাঝে-মধ্যে আদিবাসী নৃত্যের দল যায় বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির হাটে। করোনা-আবহে সব কিছু যদিও বন্ধ। কাজও সে ভাবে জোটে না বলে দাবি স্থানীয় গোলাপী মুর্মু, মালতী কিস্কুদের। তাঁরা আরও জানান, সেচের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির উপরে নির্ভর করে যেটুকু জমিজমা আছে, তাতে চাষাবাদ চলে। কিছু দিন আগে, নিজেদের সমস্যা নিয়ে বিষ্ণুপুর মহকুমা দফতরে আবেদন জানিয়েছিলেন। তার পরে, গত মঙ্গলবার দুপুরে মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশে গ্রামে যান প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত বলেন, ‘‘একশো দিনের কাজের পাশাপাশি, ছাগল, শুয়োর ও মুরগি পালন করে লাভবান হতে পারেন গ্রামবাসী। তাই সোনামুখী কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে মহকুমা দফতরের আধিকারিক-সহ বিডিও (বিষ্ণুপুর)-কে গ্রামে পাঠানো হয়েছিল। গ্রামবাসীর সঙ্গে তাঁদের এক প্রস্ত আলোচনাও হয়েছে।’’ মাছ চাষ ও মাইক্রো সেচ ব্যবস্থার কথাও ভাবা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সোনামুখী কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের ক্ষেত্র বিশেষজ্ঞেরা জানান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের কী ভাবে স্বনির্ভর করা যায়, গ্রাম ঘুরে তা খতিয়ে দেখা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে পরিদর্শনে যাবেন সংশ্লিষ্ট জেলা দফতরের কর্মকর্তারা। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক ভাবে গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা শুয়োর চাষে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছেন। সঙ্গে ‘কড়কনাথ’ প্রজাতির মুরগি ও ‘বেঙ্গল ব্ল্যাক গোট’ প্রতিপালনের কথা চিন্তা করছে মহকুমা প্রশাসন। গ্রামবাসীর নিজস্ব জায়গায় গড়ে উঠবে খামার। বিষয়টি নিয়ে মহকুমা ভূমি দফতরের সঙ্গে আলোচনা হবে, জানান মহকুমাশাসক।
প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দেখে খুশি গ্রামের মানুষ। স্বাস্থ্য-বিধি মেনে তাঁরা আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে ফুল ছড়িয়ে বরণ করেন আধিকারিকদের। স্থানীয় নির্মল কিস্কু বলেন, “কয়েকবছর ধরে বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে চাষ করতে পারছেন না মানুষ। বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। এ বার আমাদের সঙ্গে বসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। আশায় রয়েছি।’’