তালা ভাঙাচ্ছেন বিডিও। —নিজস্ব চিত্র
অবৈধ দখলদারদের হটিয়ে মানবাজার বাসস্ট্যান্ড চত্বরে থাকা ১৬টি স্টলের দখল নিল ব্লক প্রশাসন। আগামী দিনে ওই স্টলগুলি নিয়ম মাফিক নিলাম করে বিলি করা হবে বলে জানিয়েছে মানবাজার ১ ব্লক প্রশাসন। সম্প্রতি দখলদার উচ্ছেদে অভিযানে চালান মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কবিতা মাহাতো, বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস, যুগ্ম বিডিও মনোজিৎ বসু, ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক পার্থসারথি কীর্তনীয়া প্রমুখ।
প্রায় বছর দশেক আগে পঞ্চায়েত সমিতি ওই স্টলগুলি তৈরি করে। উদ্দেশ্য ছিল এলাকার বেকার তরুণ-তরুণীরা ওই স্টল নিয়ে ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হবেন। কিন্তু বিধিমাফিক বিলিবন্টন না হওয়ায় স্টলগুলি অবৈধ দখলদারদের হাতে চলে যায়। পরে দখল উচ্ছেদের কথা উঠলেও তা বিশেষ এগোয়নি।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, ‘‘ওই স্টলগুলি থেকে পঞ্চায়েত সমিতির কোনও আয় ছিল না। দখলদারদের কিছুদিন আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে স্টলগুলি ছেড়ে দিতে বলা হয়। যাঁরা স্টল ভাড়ায় নিয়ে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক, তাঁরা পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’ তাঁর কটাক্ষ, বামফ্রন্ট আমলে এই স্টলগুলি নির্মাণ করা হলেও তাঁরা বিলিবন্টন করেনি। বাম নেতাদের উদাসীনতায় পঞ্চায়েত সমিতি কয়েক লক্ষ টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
সম্প্রতি ব্লক প্রশাসনের কর্তারা পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পশ্চিম দিকে সারি দেওয়া স্টলগুলির বেশির ভাগ শার্টারে তালা ঝোলানো রয়েছে। অনেকেই আবার স্টলগুলিকে গুদাম ঘর হিসাবে ব্যবহার করছিলেন। কেউ কেউ ভিতরের মালপত্র বাইরে সরিয়ে আনছেন। ব্লক প্রশাসনের কর্তারা ফিতে দিয়ে প্রথমে বাসস্ট্যান্ড চত্বর মাপজোক শুরু করেন। মানবাজার ১ বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা নকশা নিয়ে এসে মাপ করে দেখেছি বাস স্ট্যান্ড চত্বর এলাকায় রায়তি জমি নেই। সবটাই সরকারি জমি। স্টলের ভিতরে রাখা দোকানের মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা সময় দিয়েছিলাম। বেশিরভাগ স্টলের চাবি মেলেনি। বাধ্য হয়ে আমরা তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে দিয়েছি।’’ তিনি জানান, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর স্টলগুলি নিলাম করা হবে।
ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, আগে মানবাজারের দৈনিক সব্জি বাজার কিষাণ মান্ডিতে সরিয়ে নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির বছরে কয়েক লক্ষ টাকা আয়ের রাস্তা তৈরি হয়েছে। যদিও আগে সব্জি বাজার থেকে এক টাকাও আসত না। মানবাজার বাসস্ট্যান্ড চত্বরে থাকা স্টলগুলি থেকেও আয়ের ব্যবস্থা হতে চলেছে। ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি স্টলের সেলামি ধার্য হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া চলতি বাজার অনুযায়ী ভাড়া ধার্য করা হবে।