কত বাড়ির ক্ষতি, আজ সমীক্ষা

বিশেষ কমিটি গড়ে গ্রামবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সমীক্ষায় নামছে প্রশাসন। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 বড়জোড়া শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত

কোলিয়ারিতে বিস্ফোরণের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল ঘরবাড়ি। বড়জোড়া নর্থ ব্লক কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন স্থানীয় কেশবপুর, মনোহরডাঙা পাড়া-সহ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসনিক তদন্তের দাবিও তোলা হয়েছিল। এ বার বিশেষ কমিটি গড়ে গ্রামবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সমীক্ষায় নামছে প্রশাসন।

Advertisement

বিডিও (বড়জোড়া) ভাস্কর রায় জানান, ব্লক প্রশাসন, খনি কর্তৃপক্ষ, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর, পুলিশ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের নিয়ে সাত জনের একটি যৌথ কমিটি গড়া হয়েছে। আজ, সোমবার থেকেই কেশবপুর, মনোহরডাঙাপাড়ার মতো গ্রামগুলিতে সমীক্ষা শুরু করার কথা। বিডিও বলেন, “কোলিয়ারিতে বিস্ফোরণের জেরে ওই সব গ্রামের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না এবং ওই গ্রামগুলিকে কোলিয়ারির অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না, এই দু’টি বিষয়ের উপরেই মূলত সমীক্ষা চালানো হবে।”

কেশবপুর সংলগ্ন বাগুলি এলাকায় প্রায় ৮০০ হেক্টর জমির উপর গড়ে উঠেছে বড়জোড়া নর্থ ব্লক কোলিয়ারি। ২০১৫ সালে ওই কোলিয়ারিটি ‘ওয়েস্টবেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’-কে (ডব্লউবিপিডিসিএল) বণ্টন করা হয়। চলতি বছর থেকেই ওই কোলিয়ারিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে। তবে সে কয়লা মিশে খারা পাথর ফাটাতে গিয়ে যে বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে তার তীব্রতার জেরে আশপাশের গ্রামের ঘরবাড়িতে ফাটল ধরছে বলে অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসী।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, কোলিয়ারির দূরত্ব গ্রাম থেকে কয়েকশো মিটার। যখন-তখন বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় কেঁপে উঠছে গ্রামের মাটির বাড়ি। পাকাবাড়ির পলেস্তরা খসে পড়ছে। অনেক জায়গায় আবার দেওয়ালে ফাটলও ধরেছে। যদিও খনিতে কয়লা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘বিস্ফোরণ নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় করা হয়। তাই এই বিস্ফোরণে ঘরবাড়ি ফাটার কথা নয়।’’

বিষয়টি নিয়ে ব্লক অফিসে স্মারকলিপিও দেওয়া হয় গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে। গ্রামবাসীর অভিযোগটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় সিপিএম ও তৃণমূল নেতৃত্ব। সম্প্রতি বড়জোড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বিডিওকে যৌথ কমিটি গড়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। জেলাশাসকের নির্দেশের পরেই এ নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়।

তৃণমূল পরিচালিত বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কৃষি, সেচ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা সমীক্ষার যৌথ কমিটির অন্যতম সদস্য সুখেন বিদ বলেন, “বিস্ফোরণের জন্য কোনও ঘরবাড়ি নষ্ট হচ্ছে বলে সমীক্ষায় উঠে এলে বাসিন্দাদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।” সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী বলেন, “নর্থ ব্লক কোলিয়ারির বিস্ফোরণে বেশ কিছু গ্রামের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের দাবি যৌথ কমিটি যেন নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ায়।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement