মিছিলে মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ও বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন। নিজস্ব চিত্র
কানহোর মূর্তি ভাঙার ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি উঠছিল বিভিন্ন মহল থেকে। শনিবার সেই দাবিতে ‘মানবাজার ১ ব্লক আদিবাসী তৃণমূল’-এর ব্যানার নিয়ে পথে নামলেন এলাকার বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ও বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সরেন। থানায় দেওয়া হয় স্মারকলিপিও। সেই সন্ধ্যাতেই গ্রেফতার হলেন মূর্তি-কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী বৈদ্যনাথ মান্ডি।
মঙ্গলবার হুল দিবসের রাতে মন্ত্রীর গ্রাম কাদলাগোড়া জুনিয়র হাইস্কুল চত্বরে রাখা কানহোর মূর্তি কে বা কারা মাটিতে ফেলে দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই মূর্তি। তারপরেই ‘সিধু কানু মেলা কমিটি’-র তরফে বৈদ্যানাথের বিরুদ্ধে থানায় মূর্তি ভাঙার জন্য অভিযোগ দায়ের করা হয়। কমিটির তরফে দাবি করা হয়, তাদের কাছে বৈদ্যনাথ মূর্তি ভাঙার কথা স্বীকার করেছেন। যদিও তার প্রতিবাদ জানিয়ে মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করেছিলেন বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।
তবে রাজনীতির বাইরে গিয়ে বিভিন্ন সংসগঠন মূর্তি ভাঙায় জড়িতকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপিও দেওয়া হয় গত ক’দিনে।
এ দিন পুরুলিয়ার মানবাজারের ইন্দকুড়ি থেকে মিছিল বার হয়। মিছিল থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়। মিছিলে মানবাজার, বোরো, পুঞ্চা, হুড়া, কেন্দা প্রভৃতি থানার আদিবাসীরা ছিলেন। মানবাজারে মিছিলের পরে সন্ধ্যারানিদেবী ও রাজীবলোচনবাবু দাবি করেন, ‘‘পুলিশকে অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।’’
জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন রাতে বলেন, ‘‘শনিবার সন্ধ্যায় মানবাজার থানা এলাকা থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনা আদিবাসীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। পুলিশ গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, আজ, রবিবার ধৃতকে পুরুলিয়া আদালতে হাজির করানো হবে। এ দিন তৃণমূলের ওই মিছিল থেকে পুলিশের উপরে গ্রেফতারের জন্য সরব হতে দেখা গিয়েছে নেতাদের। মানবাজার ১ ব্লক আদিবাসী তৃণমূলের তরফে দিলীপ সরেন বলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্তের নাম দিয়েছি। তার পরেও পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আমাদের দাবিকে জোরাল করতে পথে নেমেছি।’’
জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তথা সন্ধ্যারানিদেবীর স্বামী গুরুপদ টুডু বলেন, ‘‘বৈদ্যনাথ মেলা কমিটির বৈঠকে মূর্তি ভাঙার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশকে সে কথা জানানো হয়েছে।’’ তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘‘ওই গ্রামে মন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য অনেক রক্ষী রয়েছেন। তাঁদের নজর এড়িয়ে এ ধরনের কাজ করার দুঃসাহস কারও হবে বলে মনে হয় না। বিজেপিকে হেয় করতে তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করছে।’’