বার্তা: পুরন্দরপুরে কর্মিসভায় অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
অঞ্চল সভাপতির বাড়ির লোককে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করা যাবে না বলে বার্তা দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। যাঁদের সম্পর্কে অভিযোগ থাকবে, তাঁদেরও প্রার্থী না-করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সোমবার সিউড়ি ২ ব্লকের পুরন্দরপুরে বুথ ভিত্তিক প্রতিনিধি সম্মেলনে এসে তিনি ওই কথা বলেন।
সোমবার সকালে সিউড়ি ২ ব্লকের বুথ ভিত্তিক প্রতিনিধি সম্মেলন হয়। যেখানে অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও দলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, সাঁইথিয়ার বিধায়ক নীলাবতি সাহা, ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম সহ অন্যেরা। অনুব্রত বলেন, ‘‘কোনও আত্মীয়স্বজনকে যেন কেউ প্রার্থী না করেন। যিনি অঞ্চল সভাপতি, তাঁর বাড়ির লোক যেন পঞ্চায়েতের প্রার্থী না হন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা প্রার্থী হবেন, তাঁদের পরিষেবা দিতে হবে।’’ এর পরেই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা প্রধান হবেন, তাঁরা অহঙ্কার করবেন না। মানুষকে বসতে বলবেন, চা খেতে বলবেন। কাজ এক দিনে না পারলে চার দিনে করবেন। কিন্তু অসম্মান করবেন না।’’ এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে সব আসনই তাঁরা পাবেন বলেও দাবি করেন অনুব্রত।
তৃণমূলেরই একাংশের মতে, তাঁদের দলের নিচুতলার কিছু নেতা-কর্মীর আচরণে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। আবাস যোজনা-সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পে দুর্ণীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগও উঠেছে জেলায়। সে-সব জেনেই এই বার্তা দিয়েছেন জেলা সভাপতি। অন্য দিকে, তীব্র আক্রমণ ও কটাক্ষ করেছেন বিজেপি-কে।
বিজেপি লোকসভা ভিত্তিক সাংগঠনিক জেলা ভাগ করেছে। সেই হিসেবে বীরভূম ও বোলপুর সাংগঠনিক জেলার জন্য নতুন দু’জন সভাপতি হয়েছেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে অনুব্রত বলেন, ‘‘বীরভূম এবং পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম বিধানসভা ধরে মোট ২৪ ব্লক রয়েছে। এর জন্য বিজেপি ৬ জন সভাপতি করলে ভাল হত।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘লোকজন নেই, আবার দুটো সভাপতি! নতুন সভাপতিদের কে চেনে? ঠিকমতো চলতে পারে না। আর কথা বলতে জানে না। তারা আবার দল করবে। পাগল-ছাগলের দল।’’
সম্প্রতি সাংগঠনিক রদবদলের পরে একাধিক দলীয় নেতা ও বিধায়ক বিজেপি-র রাজ্যস্তরের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। বলেই সূত্রের খবর। সেই প্রসঙ্গে এ দিন দুপুরে বোলপুরে অনুব্রত বলেন, ‘‘একটা ভেড়ার দলে যদি ভাল ভেড়া আর অন্য ভেড়া ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে ভাল ভেড়াগুলো এমনিতেই পালিয়ে যাবে। বিজেপি দলের এমনই অবস্থা।’’
অনুব্রতর ওই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি-র বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ ওরফে অষ্টম মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের দলে যে রদবদল হয়েছে তা নিয়ে ওঁর (অনুব্রত) কথা বলার কোনও অধিকার নেই। তিনি তাঁর নিরাপত্তারক্ষী ছেড়ে ময়দানে আসুন, কে চলতে পারে না, দেখা যাবে।’’