মাদল বাজাচ্ছেন অভিষেক। রামনগরে। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শেষ দিনের কর্মসূচিতেও উপচে পড়ল ভিড়। রোড-শো, বোলপুরের কঙ্কালীতলা ও লাভপুরের ফুল্লরা মন্দিরে পুজো দেওয়া থেকে শুরু করে মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার বীরভূমে তিন দিনের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি শেষ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
মঙ্গল ও বুধবার রামপুরহাট ও সিউড়ি মহকুমা এলাকায় ঘোরার পরে এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ ইলামবাজার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা থেকে রোড-শো করেন অভিষেক। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা পরে রোড-শো শুরু হয়। চড়া রোদ উপেক্ষা করেই বহু মানুষকে রাস্তার দু’পাশে, বাড়ি, দোকানের ছাদে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অভিষেককে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, সাংসদ অসিত মাল। রোড-শো শেষ হওয়ার পরে ইলামবাজার-বোলপুর রাস্তার উপরে রামনগর এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায় মানুষজন অভিষেককে বরণ করে নেন। তাঁদের সঙ্গে ধামসা মাদল বাজান অভিষেক।
অভিষেকের পরের গন্তব্য ছিল বোলপুর শহরের জামবুনি বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করার পরে তাঁর হাতে কবির ছবি তুলে দেন বোলপুরের পুরপ্রধান পর্ণা ঘোষ। উপস্থিত মানুষজনের সঙ্গে আলাপচারিতায় কিছু সময় কাটিয়ে তিনি পৌঁছন কঙ্কালীতলা মন্দিরে। অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তাঁর হাতে কঙ্কালী মায়ের একটি ছবি তুলে দেওয়া হয়। মন্দির চত্বরে থাকা মানুষজনের সঙ্গে আলাপচারিতাও সারেন অভিষেক। সোনাঝুরি হাটের শিল্পী কুন্তি সাউ তাঁর হাতে একটি একতারা তুলে দেন। সঙ্গে তাঁর ছোট মেয়ের অসুস্থতার কথাও জানান অভিষেককে। ওই মহিলাকে আশ্বস্ত করেন অভিষেক।
কঙ্কালীতলার পরে লাভপুরের ফুল্লরা মন্দিরে পুজো দেন অভিষেক। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ। মন্দির সংলগ্ন মাঠে জনসভা ছিল অভিষেকের। বিকাল ৫টায় সভা শুরুর কথা থাকলেও সাড়ে ছ’টার পরে সভা শুরু হয়। অভিষেক তাঁর বক্তব্যে রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘বঞ্চনা’ নিয়ে সরব হন। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের খতিয়ানও তুলে ধরেন। বাংলার প্রাপ্য টাকা না-পেলে দিল্লি ঘেরাও হুঁশিয়ারি ফের শোনা যায় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের মুখে। বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভোটের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড , কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী করব বলেছিলাম। সেগুলো করেছি। আর যারা ভোটের আগে অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তাঁরা টাটা বাইবাই করে চলে গিয়েছেন।’’ অভিষেকের সংযোজন, ‘‘১০০ দিনের কাজ , আবাস যোজনার টাকা আমাদের ন্যায্য অধিকার। আমরা বলেছিলাম বকেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ১ কোটি চিঠি পাঠাতে। গত কাল পর্যন্ত ১০ লক্ষ চিঠি পাঠানো হয়েছে। ১ কোটি পাঠানো হলে বকেয়া টাকা আদায় কী করে করতে হয় দেখিয়ে দেব।’’ একই সঙ্গে কেন্দ্রের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘প্রাপ্য টাকা আদায়ে প্রয়োজনে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কৃষি ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আমি আন্দোলন করব। কোনও নেতার ক্ষমতা নেই বাংলার টাকা আটকে রাখার!’’
সহ প্রতিবেদন: অর্ঘ্য ঘোষ