cow smuggling scam

কেরিমকে তলব বৈঠকে, চাওয়া হল জমির নথি

গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিমের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ অভিষেকের কাছে আগেই জমা পড়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৯:২৫
Share:

কেরিম তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

বীরভূমে তিন দিনের নবজোয়ার কর্মসূচি শেষে জেলার নেতাদের একগুচ্ছ নির্দেশ মেনে চলার বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই নির্দেশ মতো রবিবার বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকে বসলেন জেলার কোর কমিটির সদস্যরা। নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আব্দুল কেরিম খানের বক্তব্য শোনার জন্য নানুরের ওই তৃণমূল নেতাকেও এ দিন বৈঠকে ডাকা হয় বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। কেরিম তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Advertisement

এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সাংসদ শতাব্দী রায়, অসিত মাল জেলা সভাধিপতি তথা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, কাজল শেখ-সহ উপস্থিত ছিলেন বাকি সদস্যরা। ছিলেন সম্প্রতি জেলার যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে, সেই জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, নানুরের তৃণমূল নেতা আব্দুল কেরিম খান। সেই সঙ্গেই এ দিনের বৈঠকে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের সদস্যরাও ছিলেন বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি।

দলীয় সূত্রের খবর, নবজোয়ার কর্মসূচিতে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠনের ঢিলেঢালা মনোভাব এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সেই নির্দেশ মতো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে যাতে সবাই একসঙ্গে কাজ করেন সেই বার্তা এ দিনের বৈঠক থেকে প্রত্যেককে দেওয়া হয় বলে জানা হিয়েছে।

Advertisement

গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কেরিমের বিরুদ্ধে জমি সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ অভিষেকের কাছে আগেই জমা পড়েছিল। এরপরই জেলা ছাড়ার আগে অভিষেক কেরিমকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরানোর নির্দেশ দেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে জেলার অন্য নেতারা অভিষেককে বুঝিয়ে নরম করেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। তবে কেরিমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন কোর কমিটির বৈঠকে তাঁকে ডাকা হয় বলে তৃণমূল সূত্রের দাবি।

তৃণমূল সূত্রে দাবি, নানুরের মিলন মেলা মাঠের জন্য জমি হাতিয়ে নেওয়ার যে অভিযোগ কেরিমের বিরুদ্ধে উঠেছিল সেই কাগজপত্রও এ দিন চাওয়া হয়। এ দিন কোনও পদ থেকে তাঁকে সরানো না হলেও গোষ্ঠী কোন্দল মিটিয়ে দলে থেকে কাজ করার স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয় বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “নানুরের মিলনমেলা মাঠ নিয়ে একটি অভিযোগ ছিল। তার প্রেক্ষিতে এ দিন কেরিম খানকে ডাকা হয়। সেই অভিযোগ কী এবং তার তথ্য পুরোপুরি দিতে বলা হয় তাঁকে।’’

কেরিম বলেন, ‘‘যে জমি নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বৈঠকে আমি সবটাই বলেছি। যে কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে তাও দু-এক দিনের মধ্যে দিয়ে দেব।’’ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার বার্তা প্রসঙ্গে কেরিম বলেন, ‘‘কোথাও কথা কাটাকাটি হতেই পারে, সেটা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়। দলের নির্দেশ মেনে আমি কাজ করব।’’ কেরিমকে সরানো নিয়ে বিকাশ বলেন, ‘‘মেলার মাঠের কাগজপত্র আমরা দিতে বলেছি। তবে এখনই তাঁকে পদ থেকে সরানোর কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। উনি যেমন কাজ করছেন তেমন কাজ করবেন।’’

একই সঙ্গে জেলার ৬-৭টি জায়গায় যে ব্লকগুলিতে কর্মসূচি কম হয়েছে, সেই ব্লক, অঞ্চল গুলিতে লাগাতার কর্মসূচি করার জন্য দলের বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের নির্দেশ দেওয়া হয় এ দিনের বৈঠকে। দুবরাজপুর ব্লককে বিশেষ ভাবে জোর দিতে বলা হয়েছে বলেও তৃণমূল সূত্রে দাবি। পঞ্চায়েতে প্রার্থী নিয়ে কোথাও কোনও গোষ্ঠী কোন্দল যাতে না হয় সেই বিষয়েও জানানো হয় সকলকে। তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন সকলকে একসঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে বলে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নির্দেশ দিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement