এ ভাবেই জল সংগ্রহ করেন বাইদটাঁড়ের মহিলারা। ছবি: সুজিত মাহাতো।
ভোট এল। তবু ছবিটা বদলাল না। এখনও জলের জন্য পেরোতে হয় আড়াই কিলোমিটার পথ! তা-ও পরিশ্রুত পানীয় জল পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।
জলস্বপ্ন থেকে শুরু করে হর ঘর জল প্রকল্প, সবই যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে পুরুলিয়ার আড়শা গ্রাম পঞ্চায়েতের তিলাইটাঁড় গ্রামের বাইদটাঁড় টোলায়— এমনই ধারণা এলাকাবাসীর।
অযোধ্যা পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তায় শিরকাবাদ মোড় থেকে ডান দিকে ঘুরে বাইদটাঁড়ে পৌঁছতে হয়। পাহাড়ের পাদদেশে পাথরের ডুঙরির উপর প্রায় শ’খানেক মানুষের বসতি। জমির আল দিয়ে উঁচু-নিচু রাস্তা পেরিয়ে পৌঁছতে হয় এই আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায়।
সম্প্রতি ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোনও নলকূপ বা সরকারি কুয়ো নেই। হাতে খোঁড়া দাঁড়ি (ছোট কুয়ো) থেকে জল সংগ্রহ করছেন মহিলারা। তাঁরা জানান, ছোট ছোট পাথর দিয়ে গর্ত বাঁধিয়ে সেখান থেকে জল তোলা হয়। তারপর নোংরা জল কাপড়ে ছেঁকে নিতে হয়। অভিযোগ, অনেকে বাড়ির শৌচালয় ব্যবহার করতে পারেন না জলের অভাবে।
স্থানীয়দের মধ্যে বাহামণি মুর্মু, লক্ষ্মী মুর্মুরা বলেন, ‘‘গরমকালে দাঁড়ি (ছোট কুয়ো) শুকিয়ে গেলে কষ্ট আরও বাড়ে। আমাদের এই দুর্দশা কবে দূর হবে, কে জানে!’’
আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বরূপ মাঝি বলেন, “ওখানে আগে কোনও বসতি ছিল না। কয়েকটি পরিবার টিলাইটাঁড় গ্রাম থেকে সেখানে উঠে এসেছেন। তাঁদের জলের সমস্যার বিষয়টি নজরে এসেছে। কী ভাবে জল সঙ্কট মেটানো যায় দেখছি।” আড়শা ব্লকের বিডিও গোপাল সরকার জানান, বিষয়টি তাঁর জানা নে ই। কোনও সমস্যা থাকলে সমাধান করা হবে।
স্থানীয় জয়পুরের বিজেপি বিধায়ক নরহরি মাহাতো বলেন, ‘‘সমস্যার কথা আগে আমাকে কেউ জানাননি। সমস্যা থাকলে বিধায়ক তহবিল থেকে জলের ব্যবস্থা করব।’’ পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের নিবেদিতা মাহাতোর আশ্বাস, ‘‘ওই এলাকার সমস্যার বিষয়টি খোঁজ নেব। এমনটা হলে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সর্বত্রই জল দেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। ওই এলাকায় কী করা যায়, দেখছি।’’