অভিনব বাইক বানিয়ে নজর কারল বিশ্বভারতীর শিক্ষাসত্রের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রূপম সরকার। ছবিঃ বাইকের ছবি রূপম সরকারের কাছে পাওয়া।
আট বছর ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়েছিল বাবার পুরনো মোটরবাইক। সে বাইকের বয়স বাইশ। বাবা ভেবেছিলেন, এ বারে কেজি দরে বিক্রিই করে দেবেন। কিন্তু, ছেলে ভেবেছিল অন্য রকম। সেই ভাঙাচোরা বাইককেই একদম নতুন ভাবে বানিয়ে চমকে দিয়েছে বিশ্বভারতীর শিক্ষাসত্রের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রূপম সরকার। এত অল্প বয়সে তার এমন উদ্ভাবনী ক্ষমতায় চমৎকৃত অভিভাবক থেকে সহপাঠী ও শিক্ষকেরা।
পাড়ুইয়ের বাতিকার এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রনারায়ণ সরকার ও মৌসুমী সরকারের একমাত্র ছেলে রূপম। ইন্দ্রনারায়ণ গাড়ি ফিনান্সের কাজের সঙ্গে যুক্ত। ছেলের পড়াশোনার সূত্রে অনেক বছর ধরেই তিনি বোলপুরের সুরুল এলাকায় ঘরভাড়া করে থাকেন। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের বিভিন্ন মডেল থেকে শুরু করে নানা ধরনের যন্ত্র তৈরির নেশা রূপমের। আগে বিজ্ঞানের বেশ কিছু মডেল বানিয়ে সে নজর কেড়েছে। বড় হয়ে তার ইচ্ছা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার।
রূপমের দাবি, বাড়িতে পড়ে থাকা সেই ২২ বছরের বাইকের ইঞ্জিন দিয়ে দেড় মাসের চেষ্টায় লোহার পাইপ, জলের গ্লাস, পরীক্ষার বোর্ড-সহ নানাবিধ উপকরণ দিয়ে একেবারে অন্য ধরনের বাইক তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে সে। বাইকটি তৈরি করতে হাজার ছয়েক টাকা লেগেছে বলেও তার দাবি। রূপম জানায়, চাকার রিং আর ইঞ্জিন পুরনো বাইক থেকে নেওয়া হয়েছে। চাকা আর হেডলাইট পুরনো কেনা হয়েছে। পেট্রলের সাহায্যেই চলছে নতুন বাইক। সেই বাইক তৈরির পর তা নিয়ে স্কুলে আসতেই, বাইক দেখতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। মুহূর্তের মধ্যে বাইকের ছবি সমাজমাধ্যমেও ভাইরাল হতে থাকে।
রূপমের কথায়, “ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল, নিজের মতো একটা বাইক তৈরি করার। কিন্তু, হয়ে উঠছিল না। এর পরে বাড়িতে বাবার পড়ে থাকা বাইকের পুরনো ইঞ্জিন দিয়েই নতুন বাইক তৈরি শুরু করি। তবে আমিও ভাবিনি এতটা সুন্দর ভাবে তৈরি করতে পারব।’’ ভবিষ্যতে গাড়ি তৈরিরও ইচ্ছে আছে রূপমের। তার মা মৌসুমী বলেন, “পড়াশোনার থেকেও ওর ভাললাগার বিষয় হল বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন জিনিস তৈরি করা। আমরা ওকো কখনই বাধা দিইনি। ওর যখন ওই সমস্ত জিনিস তৈরির প্রতি এত ইচ্ছা, তখন সেই পথেই ও এগিয়ে যাক, এটাই চাই।’’