তালড্যাংরার স্কুলের প্রহৃত ছাত্র।নিজস্ব চিত্র।
প্রথম শ্রেণির এক আবাসিক ছাত্রকে হস্টেলে বেদম মারধর করার অভিযোগ উঠল। তবে মারধরে কারা যুক্ত তা নিয়ে ধন্দ দেখা দিয়েছে। শনিবার রাতে তালড্যাংরার কাদামাড়া প্রাথমিক স্কুলের আশ্রম হস্টেলের ঘটনা।
এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হস্টেল সুপারকে রবিবার আটক করেছে পুলিশ। বছর ছয়েকের প্রহৃত শিশুটি তালড্যাংরার চপারডাঙার বাসিন্দা। তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মদনমোহন মান্ডির দাবি, “শনিবার রাতে হোস্টেলের ছাত্ররাই মারপিট বাঁধিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে শুনেছি। কয়েক জন ছাত্র এই ঘটনার কথা স্বীকারও করেছে।”
কাদামাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের মোট ২০ জন আবাসিক ছাত্র ওই হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। যে ভাবে ওই শিশুকে মারধর করা হয়েছে, তা আদৌ ছোটদের পক্ষে সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির মাথার পিছনের অংশ ফেটে গিয়েছে। মুখের অনেক জায়গা কেটে ফুলে গিয়েছে। পিঠ এবং বুক জুড়ে বেত আর ডাস্টারের দাগ। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, বেতের দাগ শরীরে বসলেও, ডাস্টারের দাগ সাধারণত সহজে বসে না। খুব জোরে ডাস্টার দিয়ে মারলে দাগ হয়।
ওই ছাত্রের বাবা সাগেন মান্ডি জানান, শনিবার রাতে ছেলের খবর নেওয়ার জন্য তিনি দু’বার হস্টেল সুপারকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ফোন না ধরে কেটে দেন। বিপদের আঁচ পেয়ে রবিবার সকালেই তিনি হস্টেলে ছুটে আসেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘হস্টেলের শিশুরা এ ভাবে মারধর করতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। যাই হয়ে থাক, সেটা হস্টেলের দায়িত্বে থাকা সুপারের গাফিলতি।’’
হস্টেলে এসে বিষয়টি জানার পরেই ওই ছাত্রের পরিবার চাইল্ড লাইনের হেল্প লাইনে ফোন করে খবর দেয়। চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ হস্টেল সুপারকে আটক করে। এ দিন সন্ধ্যায় সুপারের বিরুদ্ধে থানায় কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রের বাবা।
রবিবার চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা হাসপাতালে ভর্তি প্রহৃত শিশুটিকে দেখতে যান। তাঁরা জানান, সে এখনও আতঙ্কে কুঁকড়ে রয়েছে। কোনও কথা বলতে পারছে না। জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীল বলেন, “খবর পেয়েই আমরা হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির সঙ্গে দেখা করেছি। পুলিশকেও বলেছি যাতে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হয়।”