প্রতিযোগিতার আমন্ত্রণপত্রে সভাপতিa টুলুর নাম। নিজস্ব চিত্র
অন্যান্য বারের মতো এ বছরও শনিবার, ইদের দিন সিউড়িতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে বীরভূম জেলা ইদ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন। এ বার তাদের ১১০ তম বর্ষ। কিন্তু, শতাব্দী প্রাচীন সেই অনুষ্ঠানে ক্রীড়া কমিটির সভাপতি হিসাবে যাঁর নাম রয়েছে, সেই নাম সামনে আসতেই জেলায় চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, সভাপতির নাম টুলু মণ্ডল!
গরু পাচার মামলায় নাম জড়ানো পাথর কারবারি টুলু মণ্ডলকে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তাঁর সিউড়ি ও মহম্মদবাজারের একাধিক বাড়ি ও পেট্রলপাম্রে গত বছর অভিযানও চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। দিন সাতেক আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সিউড়ির জনসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনেই তাঁর উদ্দেশে তোপ দেগেছেন। এ হেন টুলুরই আজ, শনিবার উদ্যোক্তা সংগঠনের সভাপতি হিসাবে মাঠে থাকার কথা। সেই একই মঞ্চে থাকার কথা জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলাশাসক বিধান রায় এবং জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের। অন্তত খেলার আমন্ত্রণপত্র সেটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এ কথা জানাজানি হতেই নানা চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ‘বিতর্কিত’ ওই পাথর ব্যবসায়ীকে নিয়ে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল জেলা ইদ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন?
এ দিন টুলুকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে, অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি কাজী ফরজুদ্দিন যদিও বলেন, ‘‘কমিটি তৈরি হয়েছে এক বছর আগে। তখন থেকেই টুলু মণ্ডল সভাপতি। তখনও ইডি-সিবিআই কিছু ছিল না। কমিটির কার্যকরী সভাপতি এবং এক জন আইনজীবী হিসাবে ঘোষিত সিদ্ধান্ত বদলেরও কোনও কারণ দেখি না। কেউ অভিযুক্ত মানেই তিনি দোষী নন। কিছুই তো প্রমাণ হয়নি!’’
তবে, শুধু ক্রীড়া কমিটিই নয়, প্রশাসনের হয়ে অবৈধ পাথর থেকে জরিমানা আদায়ের দায়িত্বেও এখন রয়েছেন শাসকদলের ‘ঘনিষ্ঠ’ ওই ব্যবসায়ী। মাঝে সিবিআই-ইডি তঞপর হতে টুলু কিছুদিন অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন।গরু পাচার মামলায় গত নভেম্বরে দিল্লিতে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু, জেলায় ফিরতেই মহম্মদবাজারে একটি খুনের অভিযোগ তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে অবশ্য চার্জশিট থেকে ওঁর নাম বাদ দেয় পুলিশ।
এমন এক ব্যক্তি ক্রীড়া অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তিদের পাশে উপস্থিত থাকবেন কেন, চর্চা সেটা নিয়েই। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা অপরাধী বলে ওঁকে (টুলু) মনে করেন, তাঁরা কেউ যাবেন না বলেই আমরা মনে করি।’’অন্য দিকে, বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার মন্তব্য, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। কেন্দ্রীয় সংস্থা সঠিক পথেই তদন্ত করছে। এর বেশি কিছু আমি বলতে চাই না।’’