দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ওসির গাড়ি। শনিবার গণপুরে। নিজস্ব চিত্র।
ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল পুলিশের গাড়ির চালকের। জখম হলেন মুরারই থানার ওসি মহম্মদ সাকিব সাহাব। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওসির গাড়ির চালক হামিদুল শেখ (২৭)। তাঁর বাড়ি পাড়ুই থানার কাষ্ঠগিরি গ্রামে। শনিবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে, মহম্মদবাজার থানার গণপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে। সিউড়ি সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ওসি-কে ছেড়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওসি মুরারই ফিরে যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন চারেক আগেই জয়দেব ফাঁড়ির ইনচার্জ থেকে মুরারই থানায় ওসি হিসেবে যোগ দিয়েছেন মহম্মদ সাকিব সাহাব। এ দিন তিনি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়ায়, নিজের বাড়ি থেকে গণপুর হয়ে মুরারই যাচ্ছিলেন। গণপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে রামপুরহাট দিক থেকে আসা একটি ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ওসি-র গাড়ির। গুরুতর আহত হন ওসি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে মহম্মদবাজার থানার পুলিশ। ওসিকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় সিউড়ি সদর হাসপাতালে। চালকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালেই পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওসি-র হাতের আঙুলে ও শরীরের অন্যান্য কয়েকটি স্থানে হালকা চোট লেগেছিল।
গাড়ির পিছনের সিটের বাঁ দিকে বসে থাকায় তাঁর আঘাত গুরুতর হয়নি। চিকিৎসার সময় মহম্মদ সাকিবের সঙ্গেই ছিলেন সিউড়ি থানার আইসি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
ঘটনার পরেই পালিয়ে যান ডাম্পারের চালক ও খালাসি। দু’টি গাড়িকেই নিয়ে আসে পুলিশ। ডাম্পারের ধাক্কায় ওসি-র গাড়ির সামনের দিকের অংশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চালকের বসার দিকের চাকা খুলে চলে গিয়েছে। কার্যত গোটা গাড়িটিই দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনার পরে জাতীয় সড়কে কিছুক্ষণের জন্য যানজট হয়। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
ঘটনা হল, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে বেড়েই চলেছে পথ দুর্ঘটনা। ক’দিন আগে এই জাতীয় সড়কেই রামপুরহাটের মনসুবা মোড়ে একটি মোটরভ্যানের সঙ্গে পিক-আপ ভ্যানের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ধান পোঁতার কাজ করতে যাওয়া চার মহিলা খেতমজুরের।
গত কয়েক মাসে বারবার দুর্ঘটনা ঘটেছে জাতীয় সড়কে। হতাহত অনেক। অথচ দুর্ঘটনা রুখতে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর প্রচার চালাচ্ছে জেলা পুলিশ। তাতেও দুর্ঘটনা থামার লক্ষণ নেই। এ বারে দুর্ঘটনার কবলে পুলিশ আধিকারিকেরই গাড়ি। পুলিশ সূত্রেই জানা যাচ্ছে, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে ১৫ জন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।