—প্রতীকী চিত্র।
রোগিণীর বয়স ৬৪৭৬৬ বছর! ডাক্তারের সাক্ষর থাকা রক্ত দেওয়ার নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে এমনই ভুল ধরা পড়ায় ফের বিতর্কে জড়াল বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এ জন্য রক্ত জোগাড় করতে নাজেহাল হতে হল রোগিণীর পরিবারকে। কী করে এই ভুল হল, তা নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। বিষ্ণুপুর হাসপাতালের সুপার শুভঙ্কর কয়াল বলেন, “কী ঘটেছে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলাশুলির ৩৮ বছরের এক মহিলা বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দেওয়া প্রয়োজন ছিল। মঙ্গলবার নিয়ম মতো ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত সংগ্রহ করার নির্দিষ্ট আবেদনপত্রে সাক্ষর করেন চিকিৎসক।
রোগীর আত্মীয় দিনু গরাঁইয়ের দাবি, ‘‘বিষ্ণুপুর ব্লাড ব্যাঙ্ক জানায়, ওই গ্রুপের রক্ত তাদের নেই। আমরা ওন্দা হাসপাতালে রক্তের খোঁজ করতে গেলে সেখানকার কর্মীদের নজরেই আবেদনপত্রের ভুল ধরা পড়ে। রক্ত থাকা সত্ত্বেও তাঁরা আবেদনপত্রে রোগিণীর বয়স ৬৪৭৬৬ বছর এবং মহিলার জায়গায় ‘পুরুষ’ লেখা থাকায় তা দিতে পারলেন না। চিকিৎসকের সাক্ষর করা ও সিলমোহর দেওয়া আবেদনপত্রে এত বড় ভুল হল কী করে?’’ তাঁর অভিযোগ, বিষ্ণুপুর হাসপাতালে এসে ফিমেল ওয়ার্ডের নার্সদের ভুলের কথা জানালে তাঁরা এড়িয়ে যান।
রক্ত না পেয়ে রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক শুনে সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ছুটে আসেন রেড ভলান্টিয়ারের সদস্যেরা। তাঁদের চেষ্টায় বিষ্ণুপুর ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকেই ওই গ্রুপের রক্ত দেওয়া হয়।
বুধবার ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর বাঁকুড়া জেলা সভাপতি তথা বিষ্ণুপুর ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক জয়মাল্য ঘর বলেন, “ভুল করে রোগীর রেজিস্ট্রেশন নম্বর বয়সের জায়গায় বসানো হয়েছিল।
মহিলার জায়গায় পুরুষ লেখা হয়েছিল। ওই টুকু সংশোধন করে দিলে রক্ত দিতে অসুবিধা হত না। অযথা রোগিণী ও তাঁর পরিবারকে হয়রান হতে হল। ঘটনাটি জানার পরেই রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। এ ধরনের ভুল না হওয়াই বাঞ্ছনীয়।”
রেড ভলান্টিয়ারের সদস্য বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “কে আবেদনপত্র পূরণ করেছেন জানি না। তবে সাক্ষর করার আগে চিকিৎসকের তা পড়ে দেখা উচিত ছিল। প্রত্যন্ত এলাকার রোগীর পরিজনেরা যাঁরা এ সব বোঝেন না, তাঁদের রক্তের গ্রুপ ভুল লিখে দিলে তার দায় কে নেবে?
এই সব খামখেয়ালিপনা বন্ধ হওয়া উচিত।’’