মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক
দুর্ঘটনাই মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে মিলিয়ে দিল তাঁর পরিজনদের সঙ্গে।
মাস ছয়েক আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন অসমের মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক। পরিজনেরা খোঁজ না পেয়ে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। সে সময়ে তাঁর খবর পেলেন, ওই যুবক বাস দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি। বাঁকুড়া মেডিক্যালের তৎপরতায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই যুবকের পরিজনদের খোঁজ এনে দিল হ্যাম রেডিয়োর ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাব।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল সূত্রে খবর, বাসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হওয়া ওই যুবককে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে ১২ এপ্রিল বাঁকুড়া মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। পরে তাঁর জ্ঞান ফিরলেও কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। ওই যুবকের আচরণ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর মানসিক অসুস্থতার বিষয়টি টের পান। শুরু হয় মানসিক রোগের চিকিৎসা। বৃহস্পতিবার ওই যুবক জড়ানো গলায় অসমিয়া ভাষায় কথা বলেন।
হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মলয় পাত্রের সঙ্গে হ্যাম রেডিয়োর ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের পরিচয় ছিল। যুবকের পরিচয় উদ্ধারের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অম্বরীশের সাহায্য চান। নিজেদের সূত্র কাজে লাগিয়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হ্যাম রেডিয়োর ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাব তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওই যুবকের দাদার ছবি পাঠায়। সেই ছবি দেখে দাদাকে চিনতে পারে ওই যুবক। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে ওই যুবকের কথাও বলানো হয়।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই যুবকের পায়ে জটিল অস্ত্রোপচার করতে হবে। সে জন্য তাঁর পরিবারের অনুমতির প্রয়োজন। ফলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা খুবই জরুরি ছিল।” হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মলয় বলেন, “হ্যাম রেডিয়োর ওয়েস্টবেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাব এর আগেও হাসপাতালে ভর্তি থাকা অজ্ঞাত পরিচয় রোগীর পরিচয় উদ্ধার করেছিল। সেই সূত্রেই তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ। এ ক্ষেত্রে যে ভাবে দ্রুততার সঙ্গে ওই যুবকের বাড়ি খুঁজে বের করা হয়েছে, তা দৃষ্টান্ত।’’
অম্বরীশ বলেন, “অসম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও তথ্য আমরা পাইনি। সেখানকার স্থানীয় হ্যাম রেডিয়োর সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবকদের ওই যুবকের ছবি পাঠাই। সেই ছবি দেখিয়ে তাঁরাই ওই যুবকের বাড়ি খুঁজে বের করেন।”
শুক্রবারই ওই যুবকের সঙ্গে দেখা করতে অসম থেকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ছুটে আসে তার পরিবার। ওই যুবকের দাদা বলেন, “ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। ছ’মাস আগে নিখোঁজ হওয়ার পরে বহু খুঁজেও পাইনি। পুলিশও পায়নি। শেষ পর্যন্ত ওকে ফিরে পেয়ে স্বস্তি পেলাম।’’