ফাইল চিত্র
শুধুমাত্র গড় কর্মদিবসের সংখ্যা বৃদ্ধি নয়, যত বেশি সংখ্যক জবকার্ডধারীকে কাজ দেওয়া এবং সেই সূত্রে প্রচুর সংখ্যক কর্মদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যেই কাজ করছে বীরভূম জেলা প্রশাসন। লকডাউন পরিস্থিতিতে উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠকে বছরে ১০০ দিনের কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে এমন ছবিই তুলে ধরার চেষ্টা করলেন বীরভূমের জেলাশাসক।
মঙ্গলবার বিকেলের ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিল, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া পূ্র্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সরকারি প্রকল্পগুলির অগ্রগতি কোন জেলায় কেমন, সেটা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি কোন জেলা কোথায় পিছিয়ে, তা চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বছরে ১০০ দিনের কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গ উঠতেই বাঁকুড়ার পরে বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, গত বছর এই সময় বীরভূমে গড় কর্মদিবস সৃষ্টি হয়েছিল ৪২.৫৭টি। এ বার কেন সেটা মাত্র ২৭।
উত্তরে জেলাশাসক বলেন, “গড় কর্মদিবস কম হয়েছে ঠিকই। কিন্তু, গতবারের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ এ বছর কাজ পেয়েছেন। গতবার যেখানে এই সময় ৪ লক্ষ মানুষ কাজ পেয়েছিলেন, এ বার সেখানে জেলায় কাজ পেয়েছেন সাড়ে ৬ লক্ষ মানুষ। কাজ পেয়েছেন ৩০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিকও।” গড় কর্মদিবস সৃষ্টিতে যেটুকু পিছিয়ে আছে জেলা, তা বর্ষা পেরিয়ে গেলেই ঠিক হয়ে যাবে বলেও মুখ্যমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেন জেলাশাসক।
করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউনে রুজি রুটি বিশাল ধাক্কা খেয়েছে। সবচেয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল নগদ টাকা। বিশেষ করে ভিন্ রাজ্য কাজ হারিয়ে জেলায় ফেরা হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিকেরা ছিলেন। লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই গরিব মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছতে মূল হাতিয়ার ছিল ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প। কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যক জবকার্ডধারী পরিবারকে কাজ দিয়ে কর্মদিবসের গড় বাড়ানোর চেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে কাজ দেওয়ার দিকে নজর দেয় বীরভূম প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় মোট সাড়ে পাঁচ লক্ষ পরিবারের কাছে জবকার্ড ছিল। প্রশাসনের হিসেবে, প্রতি পরিবারে গড় দু’জন করে মোট ৯ লক্ষ মানুষ আওতায় ছিলেন। এ ছাড়া নতুন করে জবকার্ডে আবদেন দেওয়ার সুযোগ মিলতেই পরিযায়ী শ্রমিক-সহ ২২ হাজার নতুন জবকার্ড তৈরি হয়েছে। জেলায় কর্মদিবস সৃষ্টি এক কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। বর্ষা ও ভরা চাষের মরশুম কাটতেই জোর আরও বাড়বে।
বাংলা আবাস যোজনা এবং বাংলা সড়ক যোজনা সফল করতে কাজের গতি বাড়ানোরও নির্দেশ এ দিন দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে বাংলা সড়ক যোজনায় অন্য অনেক জেলার সঙ্গে পিছিয়ে বীরভূমও। মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, বীরভূমে নতুন করে ৭৫ কিমি রাস্তা হওয়ার কথা থাকলেও, এ পর্যন্ত মাত্র ৯ কিমি রাস্তা তৈরি করেছে।