কিসান ক্রেডিট কার্ড কিনলে এমন জিরোটিলেজ যন্ত্র কিনতেও ভর্তুকি পাবেন চাষিরা। সিউড়ির কাছে ধনঞ্জয়বাটির মাঠে তোলা নিজস্ব চিত্র।
ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য দু’টি সরকারি প্রকল্পে পাঁচ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ হয়েছে জেলায়। চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ও উপযুক্ত নথিপত্র-সহ আবেদন করলেই মিলতে পারে ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার এই সুযোগ। তবে, শর্ত একটাই— আবেদনকারী চাষির কিসান ক্রেডিট কার্ড (কেসিসি) থাকতেই হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৮ নভেম্বর থেকে চাষিদের জন্য চলছে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি পক্ষ। মূল লক্ষ্য, সকল চাষির হাতে কিসান ক্রেডিট কার্ড পৌঁছে দেওয়া। যাতে এক জন চাষি কৃষিঋণ, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও ফসলবিমা যোজনার সুফল নিতে পারেন। চলছে প্রচারও। কিন্তু, ঘটনা হল, এখনও প্রায় দুই তৃতীয়াংশ চাষির কাছে কিসান ক্রেডিট কার্ড নেই। কেসিসি থাকা যে কতটা জরুরি, তা ভর্তুকিতে যন্ত্র কেনার সরকারি প্রকল্প থেকেই পরিষ্কার।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, সরকারি প্রকল্প, ‘ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট স্কিম ফর ফার্ম মেকানাইজেশন’ সংক্ষেপ এফএসএসএম-এ ৪ কোটি ৩৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা এসেছে। জেলার ১৯টি ব্লকের চাষিরা ৩৫-৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, পাওয়ার ট্রিলার (চাষ দেওয়ার যন্ত্র), পাম্পসেট, পাওয়ার রিপার (ফসল কাটার যন্ত্র), পাওয়ার স্প্রেয়ার ও জিরোটিলেজের মতো ভারী কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে পারবেন। সর্বাধিক ভর্তুকির পরিমাণ ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। কী যন্ত্র কিনতে আগ্রহী, উপযুক্ত নথি দিয়ে ব্লক সহ-কৃষি আধিকারিকের কাছে আবেদন করবেন চাষি। তা মঞ্জুল হলে ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই তিনি সেই যন্ত্র কিনতে পারবেন। প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও নিতে পারেন। ভর্তুকির টাকাও ব্যাঙ্কেই জমা হবে। হাতে টাকা পাবেন না চাষি। অনুমোদিত কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রয়কেন্দ্রকে টাকা দেবে ব্যাঙ্কই। জেলা সহ-কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) অমর মণ্ডল বলছেন, ‘‘কমপক্ষে সাড়ে পাঁচ হাজার চাষি এতে উপকৃত হবেন। ১৬-৭ ডিসেম্বরের মধ্যেই আবেদন করতে হবে চাষিকে।’’
দফতর আরও জানাচ্ছে, হ্যান্ড স্প্রেয়ার, ধান ঝাড়াই মেশিন, ড্রাম সিডার (বীজ বোনা যন্ত্র), কুনইডার (আগাছা পরিষ্কারের যন্ত্র), এমনকী কাস্তে হাল-কোদালের মতো ছোট যন্তপাতি ভর্তুকিতে কেনার জন্য আর একটি পৃথক সরকারি প্রকল্পে ৭১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকাও এসেছে। এ ক্ষেত্রে ভর্তিকির পরিমাণ ৫০ শাতাংশ। কিসান ক্রেডিট কার্ড না থাকলেও একজন চাষি আবেদন করতে পারেন। তবে কিসান ক্রেডিট কার্ড থাকলে তিনি-ই অগ্রাধিকার পাবেন। জানা গিয়েছে, গত বারও দু’টি প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ ছিল প্রায় তিন কোটি। এ বার সেটা প্রায় দ্বিগুণ।