১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের এখানেই ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান দুই বাইক আরোহী। ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ পরিষ্কার করা হচ্ছে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র sabyasachi.islam@abp.in
ফের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুই মোটরবাইক আরোহীর। দুর্ঘটনাস্থল সেই ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। বুধবার দুপুরে জাতীয় সড়কের উপরে, রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় সংলগ্ন এলাকায় পাথর বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় দু’জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন বিলাস কুমার (২৬) ও নীতিশ কুমার (২৫)। তাঁরা দু’জনেই বিহারের কাটিহার এলাকার গান্ধীবাজারের বাসিন্দা।
‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ’ কর্মসূচি নিয়ে লাগাতার প্রচার চালানো হচ্ছে জেলায়। ট্রাফিক সংক্রান্ত সচেতনা বৃদ্ধিতে হচ্ছে নানা শিবিরও। কিন্তু, জেলায় পথ দুর্ঘটনায় কোনও ভাবেই লাগাম পরানো যাচ্ছে না। বিশেষ করে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে একের পর এক। চলতি মাসের ১৭ তারিখে মহরমের রাতে জাতীয় সড়কের উপরে, রামপুরহাট থানার ভোল্লা ক্যানেল ও কাবিলপুরের মাঝে দু’টি মোটর সাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে ৫ জুলাই ওই একই জাতীয় সড়কে রামপুরহাট থানার খরুন মোড় সংলগ্ন এলাকায় লরির ধাক্কায় এক স্কুটার চালকের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। গত কয়েক দিনেও জাতীয় সড়কে বাইক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকেলেই নলহাটি-মুরারই রাস্তায় পাইকপাড়া আদিবাসীপাড়ার কাছে দুই বাইকের মুখোমুখি ধাক্কায় এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার মনসুবা মোড়ের দুর্ঘটনায় মৃত দুই যুবক ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে শিবের মাথায় জল ঢেলে আসার পরে তারাপীঠ দর্শনে এসেছিলেন। তিনটি মোটর বাইকে মোট পাঁচ জন যুবক মঙ্গলবার রাতে তারাপীঠে পৌঁছন। এ দিন দুপুরে ওই পাঁচ জন তারাপীঠ থেকে কাটিহারে, নিজেদের বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁদের মধ্যে মণীশ কুমার নামে এক যুবক বলেন, ‘‘তারাপীঠ থেকে ভাগলপুর হয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য পথে জাতীয় সড়কের ধারে একটি পেট্রল পাম্পে তেল ভরে তিনটি বাইকে আমরা বেরোচ্ছিলাম। আমাদের মধ্যে একটি বাইক পাম্প থেকে বেরিয়ে জাতীয় সড়কে উঠতেই দেখি, একটা ট্রাক প্রচণ্ড গতিতে এসে ওদের ধাক্কা মেরে বেশ খানিকটা দূরে টেনে নিয়ে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, ঘটনাস্থলেই দু’জন মারা যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দা ইমামুল শেখ নামে এক যুবক বলেন, ‘‘জাতীয় সড়কে উঠতেই মল্লারপুরমুখী একটি পাথর বোঝাই ট্রাক ওই দু’জন বাইক আরোহীকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। দু’জনেই ছিটকে পড়ে যান রাস্তায়। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লেগেছিল।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মৃত দু’জনের মাথায় হেলমেট ছিল না। ঘটনাস্থল থেকে নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পাথর বোঝাই ট্রাকটির সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি মৃত দুই যুবকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।
দুর্ঘটনা এড়াতে
বোলপুর, মুরারই: জেলায় বেড়ে চলা দুর্ঘটনা এড়াতে বুধবার দুপুরে বোলপুর মহকুমাশাসকের দফতরে একটি বৈঠকে বসেছিলেন প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। ছিলেন মহকুমাশাসক (বোলপুর) অয়ন নাথ, বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগারওয়াল, পূর্ত দফতরের আধিকারিক-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। মোটরবাইক আরোহীদের হেলমেট পরা, ট্রাফিক ব্যবস্থা-সহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে শান্তিনিকেতন উপাসনা গৃহ থেকে কালীসায়ের পর্যন্ত রাস্তাটির ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও আলোচনা হয়। অন্য দিকে, দুর্ঘটনা এড়াতে এ দিন সকাল থেকে মুরারই থানা এলাকায় অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।