100 days work

মেলেনি বকেয়া মজুরি, শুনল কেন্দ্রীয় দলও

পঞ্চায়েতে বার্ধক্য ভাতা প্রাপক ও একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কিছু শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলের সদস্যেরা। সে সময়ে কিছু গ্রামবাসী সেখানে এসে অভিযোগ জানান, আবাস প্লাসের তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁতুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৬
Share:

সাঁতুড়ির কুলাই গ্রামে হাপা খননের কাজ দেখছেন পরিদর্শক। ছবি: সঙ্গীত নাগ

একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বকেয়া মজুরি দিচ্ছে না কেন্দ্র, এই অভিযোগে বার বার সরব হয়েছে রাজ্য সরকার। এ বারে পঞ্চায়েতে পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদেরও শুনতে হল ওই প্রকল্পে কাজ করার পরেও মজুরি না মেলার অভিযোগ। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি ব্লকের বিজেপি পরিচালিত গড়শিকা ও সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় পরিদর্শনে যান দুই সদস্যের ওই কেন্দ্রীয় দল।

Advertisement

এ দিন বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রথমে গড়শিকা পঞ্চায়েতে পৌঁছয় দলের দুই সদস্য। সঙ্গে ছিলেন সাঁতুড়ির জয়েন্ট বিডিও রবি সৌরভ-সহ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পঞ্চায়েত কার্যালয়ে দীর্ঘ সময় বসে কাজকর্ম খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ডাকা হয়েছিল প্রধান কৃষ্ণা মণ্ডল-সহ পঞ্চায়েতের সব কর্মীদেরও। তাঁদের কাছ থেকে আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ, বার্ধক্য ভাতা-সহ অন্য প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। জেনেছেন পঞ্চায়েত এলাকায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিষয়ে তথ্য। খোঁজ নিয়েছেন পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় কত, কোথা থেকে তা আসে, সে সবও। মাঝে বেশ কয়েক বার নথিপত্র ঠিক ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা নিয়ে এবং কিছু প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে বিশদ তথ্য না মেলায় অসন্তোষ জানাতে দেখা যায় দলের সদস্যদের। প্রধানের তবে দাবি, ”পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজ ও নথিপত্র খতিয়ে দেখার পরে কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা সন্তোষই প্রকাশ করেছেন।”

পঞ্চায়েতে বার্ধক্য ভাতা প্রাপক ও একশো দিনের কাজের প্রকল্পের কিছু শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন দলের সদস্যেরা। সে সময়ে কিছু গ্রামবাসী সেখানে এসে অভিযোগ জানান, আবাস প্লাসের তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ পড়েছে। তাঁদের মধ্যে সুবোধ রায়, আদরী হাঁড়ি, শক্তি দাসদের দাবি, “আবাস যোজনায় প্রথম তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।” যে সমীক্ষার পরে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তা যথাযথ ভাবে হয়নি বলেও অভিযোগ তোলেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের তাঁদের বাড়ির অবস্থা খতিয়ে দেখে তালিকায় নাম তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানাতে থাকেন তাঁরা। দলের সদস্য ডিসি রায় বাসিন্দাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি বলেন,”কী কারণে তালিকা থেকে ওই বাসিন্দাদের নাম বাদ পড়েছে, তার ব্যাখ্যা পঞ্চায়েত ও ব্লকের কাছ থেকে নেওয়া হবে। পরে তা নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”

Advertisement

পরে, গড়শিকার কুলাই গ্রামে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে হাপা খোঁড়ার কাজ পরিদর্শনে যান তিনি। সেখানে গ্রামের এক বাসিন্দা গোপাল মান্ডি অভিযোগ করেন, হাপা খোঁড়ার কাজ করার পরেও বকেয়া আছে কয়েক হাজার টাকা মজুরি। তিনি বলেন, ‘‘দেড় বছর হল কাজ করেছি। কিন্তু মজুরি এখনও পায়নি। পরিদর্শককে সে কথা জানিয়েছি।” পরিদর্শনের পরে ডিসি রায় বলেন, ”একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ ঠিকঠাক হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। তবে ওই প্রকল্পে কাজ করার পরেও মজুরি না পাওয়ার অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।”

এ দিন ২০১৮-২০১৯ ও ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তৈরি হওয়া কয়েকটি বাড়ি পরিদর্শন করেন দলের অপর সদস্য চন্দন সিংহ। দেখা যায়, কয়েকটি ক্ষেত্রে শৌচালয় তৈরি করা হলেও তা ব্যবহার না হওয়ায় পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। কেউ আবার বাড়ি তৈরি করলেও প্লাস্টার করেননি। কেন এমন অবস্থা, জানতে চান চন্দন। এর সঙ্গে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আবাস যোজনার টাকা আসার নথি, আবাস যোজনার প্রাপকেরা ‘উজ্জ্বলা’ গ্যাস যোজনায় রান্নার গ্যাসের সংযোগ পেয়েছেন কি না, বাড়িতে বিদ্যুৎ, পানীয় জলের সংযোগ আছে কি না, সে সবও খতিয়ে দেখা হয়েছে। বেশির ভাগ উপভোক্তাই জানিয়েছেন, ‘উজ্জ্বলা’ যোজনার সুবিধাতাঁরা পাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement