মামলাটি করেছিলেন চন্দননগর কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার বা এসি (সদর) মৌমিতা দাস (ঘোষ)। প্রতীকী চিত্র।
নিজস্ব সংবাদদাতা
কোর্টে দাঁড়িয়ে বিচারকের বিরুদ্ধেই ‘অপমানজনক’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠল হুগলি জেলার সরকারি কৌঁসুলির বিরুদ্ধে! যার জেরে শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় নামে ওই কৌঁসুলিকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন হুগলির অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক নন্দদুলাল কালাপাহাড়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সরকারি কৌঁসুলির এই ধরনের মন্তব্য কখনও বিচার প্রক্রিয়ার সুস্থ সমালোচনা নয়।
এই মামলাটি করেছিলেন চন্দননগর কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার বা এসি (সদর) মৌমিতা দাস (ঘোষ)। মামলাটির পরিপ্রেক্ষিত, চন্দননগরের অতিরিক্ত বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) ঈশিতা রায়ের একটি নির্দেশ। আদালত সূত্রের খবর, ২০২১ সালের নভেম্বরে এক মহিলা চন্দননগর থানায় প্রতারণার মামলা রুজু করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, তিনি তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নিতে গেলে থানার আইসি সৌমেন পাল শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। তিনি কমিশনারেটে অভিযোগ জানালে মৌমিতাদেবীকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই মহিলার অভিযোগ, অনুসন্ধানের নামে তাঁকে আবাসনে ডেকে হুমকি দিয়ে মৌমিতাদেবী মর্জিমতো বয়ান লিখিয়ে নেন।
এ নিয়ে ওই মহিলা কোর্টে অভিযোগ জানালে গত ৮ ফেব্রুয়ারি এসিজেএম মৌমিতাদেবীকে ওই মহিলার জবানবন্দি-সহ বিভিন্ন নথি জমা দিতে বলেন। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারকের কোর্টে যান এসি (সদর)। শুনানিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণীকে বিবাদী পক্ষ হিসেবে যুক্ত করা হয়। ওই মহিলার আইনজীবী উজ্জ্বল চক্রবর্তী কোর্টে এসি (সদর)-এর মামলা খারিজের আর্জি জানান। তিনি এও জানান, নোটিস ছাড়াই তাঁর মক্কেলকে ফোন করে একটি বেসরকারি আবাসনে ডেকে চাপ দিয়ে বিষয়টি মিটিেয় নিতে বলা হয়েছিল। নোটিস ছাড়া ডেকে পাঠানোর কথা এসি (সদর)-ও স্বীকার করেছেন বলে তিনি জানান। অভিযোগ, সওয়াল করতে উঠে সরকারি কৌঁসুলি বলেন, ‘‘চন্দননগরের এসিজেএম পক্ষপাতদুষ্ট এবং প্রতিহিংসাপরায়ণ। তিনি আইনের এ, বি, সি, ডি জানেন না।..চন্দননগরের আইসি যদি বিচারকের চেম্বারে গিয়ে ‘ম্যাডাম, ম্যাডাম’ বলে ঘোরাঘুরি করতেন এবং তাঁর কী প্রয়োজন সে সব খোঁজ করতেন তা হলে তিনি এমন নির্দেশ দিতেন না।’’ এই মন্তব্য লিখিত রায়ে উল্লেখ করেছেন অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক। তাঁর পর্যবেক্ষণ, হুগলি জেলার সরকারি কৌঁসুলি পুলিশ অফিসারদের রক্ষা করতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন।