বিজেপির ‘নবান্ন অভিযান’। ছবি: সংগৃহীত।
কৃতিত্ব জাহির করতে দেদার ছবি প্রচার করা হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। আর সেটাই কার্যত কাল হল।
বিজেপির মঙ্গলবারের ‘নবান্ন অভিযান’ সফল বলে দাবি করে ওই দলের অনুগামী বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রচার করা ছবি বা ভিডিয়োতেই কারও কারও ‘কুকীর্তি’ অনেকের চোখে পড়ে গিয়েছে। আর তাঁদের মাধ্যমেই রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুস্পষ্ট ছক ধরা পড়েছে বলে কলকাতা পুলিশের দাবি।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘নবান্ন অভিযানের নামে যে-সব রাজনৈতিক কর্মী মহাত্মা গান্ধী রোডে অশান্তি সৃষ্টি করেছেন, তাঁদের কেউ পার পাবেন না। ইট ছুড়ে, ভ্যানে আগুন জ্বালিয়ে বা পুলিশের গায়ে হাত তুলে যাঁরা গোলমাল করেছেন, তাঁদের অধিকাংশকেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। ‘ক্রাউড সোর্সিং’ বা জনগণের সাহায্য নিয়ে আমরা ওঁদের খবর পেয়েছি।’’ পুলিশি সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশকে ই-মেল করে নবান্ন অভিযানের দিন মহাত্মা গান্ধী রোডে গোলমাল সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে নির্দিষ্ট খবর দিয়েছেন অন্তত ১০ জন।
মহাত্মা গান্ধী রোডে পুলিশের টহলদার গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার সাত জনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গোয়েন্দা পুলিশ। রাজারহাট, গরফা, হাবড়া ইত্যাদি এলাকায় তাঁদের হদিস মেলে। এ দিন ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি দীপঙ্কর কুণ্ডু জানান, মিছিলকারীদের একাংশ কলকাতায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কী ছক কষেছিল, তা বুঝতে ধৃতদের জেরা করার দরকার আছে। এর আগে নবান্ন অভিযানের দিন কলকাতা পুলিশের এক এসি-কে ‘খুনের চেষ্টা’ এবং গাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগে আরও চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সব মিলিয়ে ১১ জনকে ধরা হয়েছে। তবে আরও জনা কুড়ি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে দাবি লালবাজারের। বৃহস্পতিবার বেশি রাতের খবর, ইতিমধ্যেই তাঁদের কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের খোঁজে এ দিন কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকটি দল নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব মেদিনীপুরে গিয়েছে। অশান্তি সৃষ্টিকারীদের কয়েক জন ওই সব এলাকার বাসিন্দা। আবার কয়েক জন পুলিশি ধরপাকড়ের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে ওই সব জায়গায় গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন বলে পুলিশের কাছে খবর আছে। সমাজমাধ্যমে ছবি দেখে যাঁরা পুলিশকে খবর দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক জন শিক্ষকও রয়েছেন। লালবাজারের দাবি, তিনি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, পাড়ার একটি ছেলে পুলিশকে ঘিরে ধরে মারছিলেন। গাড়িতে যাঁরা আগুন ধরান, তাঁদের এক জনের বাড়ি কোচবিহারে। পুলিশ অবশ্য তাঁর বাড়ি গিয়ে এখনও পর্যন্ত খোঁজ পায়নি।