— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দু’টি দলের দাবি একটাই। তা হল, অবিলম্বে নিয়োগ। এই দাবিতে ধর্মতলায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে থাকা নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থানের এক হাজার দিন পূর্ণ হয়েছে আগেই। আজ, শনিবার মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ৫০০ দিনে পড়ছে রাজ্য সরকারের গ্রুপ ‘ডি’ চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না-অবস্থান। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, এই উপলক্ষে তাঁরা ধর্না মঞ্চে প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করছেন। চাকরিপ্রার্থীদের তরফে আশিস খামরুই বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব দফতরের চাকরিপ্রার্থীদের করুণ অবস্থা তুলে ধরবে এই ফাঁসির মঞ্চ। আমাদের প্রশ্ন, তাঁর দফতরের চাকরিপ্রার্থীদের কি শেষ পর্যন্ত এই পরিণতি হবে? এর পাশাপাশি আমরা রাজ্যপালকে স্মারকলিপিও দেব।’’ এ দিনই ৫০০তম দিনে পা দিচ্ছে এসএসসি-র গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নাও। প্রতিবাদের চিহ্ন হিসেবে ‘লেখাপড়া করে যে, অনাহারে মরে সে’— এই শিরোনামে কর্মসূচি পালন করবেন তাঁরা।
রাজ্য সরকারের গ্রুপ ‘ডি’ চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে তাঁরা ৫০০ দিন ধরে বসে আছেন। কিন্তু তাঁদের বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছে আরও আগে থেকে। আশিস জানান, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, গ্রুপ ‘ডি’-তে ৬০ হাজার পদে নিয়োগ হবে। সেই মতো ২০১৭ সালে ৬০০০ শূন্য পদের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। আবেদন করেছিলেন ২৫ লক্ষ প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে পরীক্ষায় বসেছিলেন ১৯ লক্ষ, পাশ করেন ১৮ হাজারের মতো আবেদনকারী। সেখান থেকে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত ৫৪২২ জনের মেধা তালিকা তৈরি হয়।
এর পরেই আন্দোলনে নামেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের মূল প্রশ্ন ছিল, ৬০০০ শূন্য পদের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেন ৫৪২২ জনের মেধা তালিকা তৈরি করা হল? বাকিদের কেন মেধা তালিকায় রাখা হল না? শুধু তা-ই নয়, অপেক্ষমাণ তালিকা বা ওয়েটিং লিস্টে কত জন আছেন, সে ব্যাপারেও তাঁদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের। আশিস বলেন, ‘‘যে ৫৪২২ জনের মেধা তালিকা তৈরি হয়েছে, অস্বচ্ছতা রয়েছে সেখানেও। আমাদের দাবি, স্বচ্ছ মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং ওয়েটিং লিস্টে নাম থাকা সকলকে নিয়োগ করতে হবে।’’
চাকরিপ্রার্থীদের মতে, এই প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। কারণ, রাস্তায় দীর্ঘদিন বসে থেকেও নিয়োগ না হওয়ায় চাকরিপ্রার্থীরা অনেকেই হতাশ। কেউ কেউ অবসাদে ভুগছেন। অনেককে ছোটখাটো কাজ করে সংসার চালাতে হচ্ছে।