লোকাভাব, ওষুধের গুণ যাচাই করবে কে 

এন্টালির কনভেন্ট লেনে স্টেট ড্রাগস কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য ওষুধ ও মাদক মিলিয়ে মাসে প্রায় ৫০০ নমুনা আসে। ওখানে পরীক্ষা করা যায় ৩০০ নমুনা। তার মধ্যে থাকে ড্রাগ কন্ট্রোলের বাজেয়াপ্ত করা ওষুধ, পুলিশের উদ্ধার করা মাদকও।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ ও শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৬
Share:

ফাঁকা: এন্টালিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগস কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরির দফতর। নিজস্ব চিত্র

বাগড়ি মার্কেটের ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ ওষুধ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল। অথচ সেই ওষুধের গুণগত মান ও কার্যকারিতা পরীক্ষার পরিকাঠামো ল্যাবরেটরিতে থেকেও নেই! কারণ, শূন্য পদের অভাবে ধুঁকছে ল্যাবরেটরি।

Advertisement

এন্টালির কনভেন্ট লেনে স্টেট ড্রাগস কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য ওষুধ ও মাদক মিলিয়ে মাসে প্রায় ৫০০ নমুনা আসে। ওখানে পরীক্ষা করা যায় ৩০০ নমুনা। তার মধ্যে থাকে ড্রাগ কন্ট্রোলের বাজেয়াপ্ত করা ওষুধ, পুলিশের উদ্ধার করা মাদকও। অথচ ল্যাবরেটরিতে কার্যত প্রতি মাসেই শূন্য পদের সংখ্যা বাড়ছে। এমনকি খোদ ল্যাবরেটরির ডিরেক্টরের পদই ফাঁকা! সেই পদের দায়িত্বও সামলাতে হচ্ছে ড্রাগ কন্ট্রোলের ডিরেক্টরকেই।

বৃহস্পতিবার ল্যাবরেটরিতে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘরই ফাঁকা। কথা বলার লোক খুঁজে পাওয়াও দায়! কর্মীরা জানান, বহু পদ শূন্য থাকায় ল্যাবরেটরি এমন শ্রীহীন। এক কর্মী বলেন, ‘‘কর্মীরা অবসর নেওয়ার পরে নতুন কেউ আসছে না।’’ অন্য এক কর্মী জানান, টেকনিক্যাল, প্রশাসনিক বিভাগ মিলিয়ে ৯০ জনের বেশি কর্মী ছিলেন। এখন ৪০-৫০।

Advertisement

অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টটরের চারটি পদ। সব ক’টিই শূন্য। সিনিয়র অ্যানালিস্টের পাঁচটি পদ। সবই খালি। ১১টি জুনিয়র অ্যানালিস্টের পদে রয়েছেন ছয় চুক্তি-কর্মী। এক কর্তা বলেন, ‘‘ওষুধ পরীক্ষার ক্ষেত্রে ওই ছ’জনের উপরে নির্ভর করতে হয়।’’ সঙ্গে আছেন দু’জন গভর্নমেন্ট অ্যানালিস্ট। থাকার কথা অনেক বেশি। একটি ওষুধে ক’টি উপাদান রয়েছে, তার উপরেই নির্ভর করে পরীক্ষার রিপোর্টের গতিপ্রকৃতি। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘একটি ওষুধে একটি উপাদান থাকলে দ্রুত পরীক্ষা হতে পারে। একটি ওষুধে পাঁচটি উপাদান থাকলে পাঁচটি আলাদা জায়গায় পরীক্ষা হয়। ফলে দেরি তো হবেই।’’ আদালতের নির্দেশে ওষুধ এবং মাদক পরীক্ষাও রয়েছে। তাতে একটু ইতরবিশেষ হলেই তিরস্কার!

বাগড়ি মার্কেটের আগুনে ওষুধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই অগ্নিকাণ্ডের জেরে পাশের মেহতা বিল্ডিংয়ে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় নষ্ট হয়েছে বহু ওষুধ। সেগুলি পরীক্ষার প্রসঙ্গ উঠতেই ড্রাগ কন্ট্রোলের শূন্য পদ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কন্ট্রোলের এক কর্তা বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করতে আমাদের হয়তো কয়েক মাস পেরিয়ে যাবে।’’ বাগড়ির ওষুধের নমুনার দ্রুত পরীক্ষা করতে হলে ল্যাবরেটরিতে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন বলে ড্রাগ কন্ট্রোলের একাংশের অভিমত। রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের ডিরেক্টর স্বপন মণ্ডল জানান, শূন্য পদে নিয়োগের জন্য সরকারকে সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির মজুত ওষুধ যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোল। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ড্রাগ কন্ট্রোল সিদ্ধান্ত নেবে। পাশাপাশি, যে-সব দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে সেখানকার নমুনা সংগ্রহের পরে পরীক্ষাগারে পাঠাবে ড্রাগ কন্ট্রোল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement