ধূপগুড়ি মহকুমায় অনুমোদন রাজ্য মন্ত্রিসভার। —ফাইল চিত্র।
উপনির্বাচনের প্রচারে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ধূপগুড়িকে মহকুমা করার কথা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উপনির্বাচনে জিতে সেই কথা রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফল ঘোষণার দু’দিন পরেই গত ১১ সেপ্টেম্বর নবান্ন থেকে ধূপগুড়িকে নতুন মহকুমা হিসাবে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। ধূপগুড়িকে মহকুমা করার প্রস্তাব এ বার পাশ হল রাজ্য মন্ত্রিসভায়।
বৃহস্পতিবার নিজের কালীঘাটের বাড়িতে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকের পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ জানান, ধূপগুড়িকে মহকুমা করার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ধূপগুড়ি ও বানারহাট এই দু’টি ব্লক নিয়ে ধূপগুড়ি মহকুমা তৈরি হচ্ছে। উদয়ন বলেন, ‘‘আপাতত এই দু’টি ব্লক নিয়ে ধূপগুড়ি মহকুমা কাজ করবে। ধূপগুড়ির মানুষ দীর্ঘ দিন ধরেই মহকুমা চাইছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এবং রাখলেনও সেই প্রতিশ্রুতি। মুখ্যমন্ত্রী যে কখনও প্রতিশ্রুতি পূরণে দেরি করেন না, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ হল ধূপগুড়িকে মহকুমা করার এই সিদ্ধান্ত।’’
ধূপগুড়িকে মহকুমা ঘোষণার দাবি দীর্ঘ দিনের। গত বিধানসভা ভোটের আগে প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা সেই আশ্বাসও দিয়েছিলেন। গত সেপ্টেম্বরের উপনির্বাচনে প্রাক-পর্বে ফের সেই দাবি ওঠায় অস্বস্তিতে পড়তে হবে না তো? এ নিয়ে খানিক চিন্তিতই ছিলেন শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব। উপনির্বাচনের প্রচারের শুরুতে বিজেপির পাল্লা ভারী থাকায় শঙ্কা বাড়ছিল দলের অন্দরে। এর পরেই গত ২ সেপ্টেম্বর ঠাকুরপাঠের জনসভা থেকে অভিষেক ধূপগুড়িকে মহকুমা ঘোষণা করার সময়সীমা বেঁধে দেন। জানান, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ধূপগুড়িকে মহকুমা ঘোষণা করা হবে। তার পর থেকেই তৃণমূলের প্রচারের পালে হাওয়া লাগে। শাসকদলের একাংশের দাবি, মানুষের মুখে-মুখে মহকুমার প্রচারে অনেকটাই লাভবান হয়েছে দল। যার প্রতিফলন দেখা গেল ফলাফলে। গত বিধানসভা নির্বাচনে ধূপগুড়ি শহর এলাকায় অনেকটাই পিছিয়ে ছিল শাসক দল। এমনকি, উপনির্বাচনের প্রচারে শহরে তৃণমূলের সাংগঠনিক অবস্থাও খুব একটা সুবিধার ছিল না। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ধূপগুড়ি শহর এলাকায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের থেকে এই উপনির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ব্যবধান অনেকটাই কমেছে। এই পরিস্থিতিতে শাসক থেকে বিরোধী—সকলেই মেনে নিয়েছে, মহকুমা ঘোষণাই তুরুপের তাস হয়েছে তৃণমূলের।