প্রতীকী ছবি।
ডিজ়েলের মূল্য লিটার প্রতি ৮০ টাকা পেরোতেই সরকারি বাসে তেলের জোগান দিতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে রাজ্য পরিবহণ নিগমের। মাস চারেক আগেও যেখানে ট্যাঙ্কারপিছু ডিজ়েল কিনতে রাজ্য পরিবহণ নিগমের খরচ হত ৮ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, সেখানে এখন খরচ পড়ছে সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা। গড়ে তিন ট্যাঙ্কার তেল খরচ করে বাস চালিয়ে ঘরে আসছে ১৬-১৭ লক্ষ টাকা। ফলে দৈনিক ৯-১০ লক্ষ টাকার ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। আপাতত, সপ্তাহ দুয়েক আগে স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে পাওয়া ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা থেকেই বাসের মেরামতি এবং ডিজ়েল কেনার খরচ মেটানো হচ্ছে বলে খবর। সরকারের তরফে নিগমকে বাড়তি টাকা সাহায্য হিসেবে দেওয়ার আশ্বাস মিললেও সেই টাকা এখনও এসে পৌঁছয়নি। ফলে অচিরেই রাস্তায় বাসের সংখ্যায় টান পড়তে পারে বলে সূত্রের খবর।
করোনা পরিস্থিতিতে বাস পরিষেবা সচল রাখতে আগাগোড়াই কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন রুটে বাস চালিয়েছে রাজ্য পরিবহণ নিগম। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া থেকে সরকারি স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থাও তাঁদের করতে হয়েছে। লকডাউনের পরে দীর্ঘ সময় লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো না চলায় রাজ্য পরিবহণ নিগমকেই পরিষেবা চালু রাখতে হয়েছে। প্রাক্ করোনা পরিস্থিতিতে দিনে যেখানে পাঁচ ট্যাঙ্কার ডিজ়েল খরচ হত, এখন সেখানে বাসের সংখ্যা কমিয়ে ওই খরচ ২-৩ ট্যাঙ্কারে নামিয়ে আনা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে চালু রেখে যে সব রুটে যাত্রী কম, সেখানে বাসের সংখ্যা কমাতে হয়েছে।
তবে বাসের সংখ্যা কিছুটা কমলেও দিনে প্রায় ৪৫০ বাস রাস্তায় নামাচ্ছে নিগম। তেল খরচের কথা মাথায় রেখে এসি বা ভলভো বাসের সংখ্যা অনেকটাই কমাতে হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পরিবহণ নিগমের বকেয়া ৬ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে দু’দফায় প্রথমে এক কোটি এবং পরে ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা পেয়েছে পরিবহণ নিগম। আপাতত ওই টাকাতেই পরিষেবা চালু রয়েছে।
বেসরকারি বাস ধর্মঘট উঠে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তিতে নিগমের আধিকারিকেরা। ধর্মঘটের কারণে অতিরিক্ত বাস নামাতে হলে নতুন করে খরচের বোঝা চাপত। তবে, সরকারের বরাদ্দ টাকা না মেলায় কপালে ভাঁজ বেড়েছে নিগমের কর্মী এবং আধিকারিকদের। এ প্রসঙ্গে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে বাসের চাহিদাও বাড়ছে। এই সময়ে পরিষেবা দিতে না পারলে নিগমের আয় ধাক্কা খাবে, যাত্রীদের অসন্তোষও বাড়বে।’’