দাম বাড়লেও গত নভেম্বরের আগে যতটা দামী ছিল ততটা হবে না মদের দাম। ছবি- সংগৃহীত
গত বছরে বিলিতি মদের দাম অনেকটাই কমেছিল রাজ্যে। ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ভারতে তৈরি বিলিতি মদের দাম কমেছিল। এ বার সেই দাম বাড়তে চলেছে। আবগারি দফতর সূত্রে খবর, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন দামে মদ বিক্রি হবে। রাজ্যে রাম, হুইস্কি, ভদকা, জিন সবেরই দাম বাড়বে। বাড়বে বিয়ারের দামও। তবে সুরাপায়ীদের আশ্বস্ত করে আবগারি দফতরের দাবি, দাম বাড়লেও গত নভেম্বরের আগে যতটা দামী ছিল ততটা হবে না মদের দাম। সেই তুলনায় বরং কমই থাকবে দাম।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক দিন ধরেই মদ উৎপাদনকারীরা দাম বাড়ানোর কথা বলছিলেন। কিন্তু বাজার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় তাতে অনুমতি দেয়নি আবগারি দফতর। এ বার সেই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সব উৎপাদনকারীকেই তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের উৎপাদনমূল্য কতটা বাড়বে, তা শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। এর পর ১০ তারিখ থেকে আবগারি দফতর ঠিক করবে কোন ব্র্যান্ডের রাম, হুইস্কি, ভদকা, জিনের কত দাম হবে। সেই মতো বিভিন্ন মাপের বোতল অনুযায়ী দামের তালিকা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের আগে আবগারি দফতরের পোর্টালে দিয়ে দেওয়া হবে। বাড়বে বিয়ারের দামও। তবে দেশি মদের দাম বাড়ছে না। ওই একই দিন থেকে দেশি মদের নাম অবশ্য বদলে যাচ্ছে। এখন ‘কান্ট্রি লিকার’ বলা হলেও এর পরে দেশি মদের নাম হবে ‘ইন্ডিয়া মেড লিকার’।
আবগারি দফতরের রাজস্ব সচিব গৌতম ঘোষ আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, রাজ্য শুল্ক বাড়াচ্ছে না। শুধু উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বাড়বে। তিনি বলেন, ‘‘এখন মদের দাম ঠিক করা হয় এক্স ডিস্টিলারি প্রাইস (ইডিপি)-র উপরে নির্ভর করে। এটা উৎপাদন খরচ এবং তার সঙ্গে উৎপাদনকারীর লভ্যাংশ যোগ করে ঠিক হয়। তার ভিত্তিতেই মদের বিক্রয় মূল্য নির্ধারিত হয়।’’ কেন দাম বাড়ানো প্রয়োজন, তা জানিয়ে গৌতম বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়েছ। কিন্তু দাম বাড়ানো হয়নি। এখন পরিবহণ খরচও বেড়েছে। সেই কারণেই উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে নতুন দাম জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে এটাও ঠিক হয়েছে যে, কেউই ইডিপি ১০ শতাংশের বেশি বাড়াতে পারবেন না।’’ তা হলে কি সব মদের দামই ১০ শতাংশ বেড়ে যাবে? গৌতম বলেন, ‘‘ইডিপি জানার পরে আবগারি দফতর বিক্রয়মূল্য ঠিক করবে। কোন মদের কতটা দাম বাড়বে তা এখনই বলা যাবে না। তবে দাম ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।’’
আচমকা দাম বাড়ালে মদের বিক্রি কি ধাক্কা খেতে পারে? প্রশ্ন করায় আবগারি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুজোর সময় মদের চাহিদা বেশিই থাকে। এই সময়টায় যে কোনও ক্ষেত্রেই বেশি টাকা খরচ করতে খুব একটা অনীহা দেখান না মানুষ।’’ শুধু দুর্গাপুজোই নয়, বিশ্বকর্মা পুজোতেও মদের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। মনে করা হচ্ছে, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন দাম হলে বিশ্বকর্মা পুজোর সময়েও বাড়তি লাভের মুখ দেখতে পাবেন মদ ব্যবসায়ীরা। তবে এই সময়টায় পুরনো দামের মদ যাতে নতুন দামে বিক্রি না করা হয়, সে ব্যাপারেও কড়া নজরদারি চালানো হবে বলে আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সব উৎপাদনকারীকেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মজুত মদ ১৫ তারিখের আগেই সরবরাহ করে ফেলতে হবে।