চাপে পড়েই হিংসা সমতলে

এ ছাড়া জিএনএলএফের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সুকনা। চলতি সপ্তাহে শহিদ দিবসে মিছিল করে শক্তি দেখিয়েছিল জিএনএলএফ। তাই সেখানে দিনভর পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় সংঘর্ষের পরে এলাকা যে তাঁদেরই দখলে সেই বার্তাও দেওয়া হবে বলে মোর্চার অনেকের মত।

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ১১:১০
Share:

আহত: মোর্চা পুলিশ সংঘর্ষে জখম মোর্চা কর্মী। (ডান দিকে) মোর্চা কর্মীদের ছোড়া পাথরে আহত পুলিশকর্মী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

চাপ বাড়ছে মোর্চার। কারণ আলোচনার দাবিতে কিছুদিন ধরেই আওয়াজ তুলেছেন টানা বন্‌ধে জেরবার পাহাড়ের সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে পাহাড় সমস্যা নিয়ে কথা বলার পরে সেই আওয়াজ জোরালো হয়েছে আরও। মোর্চার অন্দরের খবর, আলোচনা শুরু হলে যাতে জিএনএলএফ, জন আন্দোলন পার্টির চেয়ে মোর্চার কথাই অগ্রাধিকার তালিকায় এক নম্বরে থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে চান গুরুঙ্গ। সে জন্য পাহাড়ে কিছু না করে শিলিগুড়ি লাগোয়া সুকনায় আন্দোলন তীব্র করার উপরে জোর দেন তিনি।

Advertisement

শিলিগুড়ির লাগোয়া এলাকা অশান্ত হলে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন অতি মাত্রায় ব্যতিব্যস্ত হতে বাধ্য। কারণ, পাহাড়ে আধা সামরিক বাহিনী সহ শয়ে-শয়ে পুলিশ থাকলেও শিলিগুড়িতে সেই সংখ্যা তুলনায় অনেক কম। কেন্দ্রীয় বাহিনীও নেই।

এ ছাড়া জিএনএলএফের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত সুকনা। চলতি সপ্তাহে শহিদ দিবসে মিছিল করে শক্তি দেখিয়েছিল জিএনএলএফ। তাই সেখানে দিনভর পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফায় সংঘর্ষের পরে এলাকা যে তাঁদেরই দখলে সেই বার্তাও দেওয়া হবে বলে মোর্চার অনেকের মত।

Advertisement

গত জুনে নতুন করে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন শুরুর পরে জিএনএলএফ, জন আন্দোলন পার্টিও তাদের সঙ্গে আসরে নামায় মোর্চাকে হিসেব কষে পা ফেলতে হচ্ছে। কিন্তু, আলোচনা শুরুর আঁচ মিলতেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় তারা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে কতটা মরিয়া সেটা বোঝানোর ছক কষেছেন।

শনিবার সাংবাদিক বৈঠকেও তা স্পষ্ট করেছেন মোর্চা সভাপতি। গুরুঙ্গ যেমন বলেছেন, ‘‘অন্য দল যাই করুক, মোর্চা গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে কোনও দিন সরেনি। সরবেও না। পাহাড়ের সঙ্গে তরাই-ডুয়ার্সেও মোর্চাই আন্দোলন জারি রেখেছে।’’ মোর্চা নেতারা এটাও মনে করিয়ে দেন, জিএনএলএফ একটা সময়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি ছেড়ে পাহাড়কে ষষ্ঠ তফসিল ভুক্ত করার চেষ্টা করায় বাধা দিয়েছিলেন তাঁরা। গুরুঙ্গের বিরোধিতায় প্রয়াত সুবাস ঘিসিঙ্গকে পাহাড় ছাড়তে হয়েছিল।

তবে আলোচনায় ডাক দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিলেও যে সময়সীমা বেঁধেছেন গুরুঙ্গ, তা নিয়েও পাহাড়ে নানা আলোচনা চলছে। কারণ, গুরুঙ্গের সিদ্ধান্ত, ৮ অগস্টের মধ্যে আলোচনার ডাক না পেলে পরদিন থেকে আন্দোলন তীব্র করা হবে। ঘটনাচক্রে, গত ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ৯ অগস্ট থেকে সারা দেশে ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’ স্লোগান তুলে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ফলে, সেই সময়ে পাহাড়ে অশান্তি তীব্র হলে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে আরও ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে। যা নিয়ে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের মন্তব্য, ‘‘অশান্তির আড়ালে কে, কেন কলকাঠি নাড়ছেন তা সকলেই বোঝেন। কে কাকে খুশি করতে চান সেটাও পাহাড়বাসী বোঝেন। এব বেশি কী বলব?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement