কোচবিহারের স্কুলে প্রতিবাদ আরজি কর-কাণ্ডের আবহে। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর কথা ভেবেছিলেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সিদ্ধান্ত হয়, পড়ুয়াদেরও ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হতে বলা হবে। সেই মতো ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে শিক্ষকে-শিক্ষিকারা আরজি করের ঘটনা নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ল ছাত্রীরা। একে একে বলতে উঠে স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতির ‘কুকীর্তি’ ফাঁস করে দিল তারা। ছাত্রীদের মুখ খুলতে দেখে সাহস পান স্কুলের শিক্ষিকারাও। তাঁদের কেউ কেউ দাবি করেন, স্কুল কমিটির ওই কর্তা তাঁদেরও ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়েছেন।
কোচবিহারের রাজারহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে বৃহস্পতিবার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াতেই অভিযুক্ত কর্তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। গ্রেফতারও হন অভিযুক্ত। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্যও জানিয়েছেন, অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
স্কুল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারেই স্কুল কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে লিখিত ভাবে জানায় কয়েক জন ছাত্রী। এক ছাত্রী জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে তাকে মোবাইলে মেসেজ পাঠান অভিযুক্ত। প্রতিবেশী হওয়ায় প্রথমে আপত্তি করেনি ওই ছাত্রী। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরেই তাকে কুপ্রস্তাব দিতে শুরু করেন ওই ব্যক্তি। ওই ছাত্রীর বক্তব্য, এ বিষয়ে সে ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারেনি। প্রকাশ্যে আনলে যদি স্কুল থেকে বার করে দেওয়া হয়, এই ভয়ে চুপ করে গিয়েছিল সে। আরও কয়েক জন ছাত্রী একই অভিযোগ করেছে বলেই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। ছাত্রীদের ওই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়তেই স্কুল কমিটির অভিযুক্ত কর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে সরব হয় স্কুলের অন্য পড়ুয়ারা। তাদের বিক্ষোভে যোগ দেন স্কুলের প্রাক্তনীরাও। অবরোধ করা হয় ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ তোলে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীর রক্ষিত বলেন, ‘‘দুপুর ২টোর পর স্কুলের ছাত্রীরা একে একে অভিযোগ করে। ওদের অভিযোগ, স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি ওদের মোবাইলে কুরুচিকর মেসেজ পাঠান। এই অভিযোগ শুধু স্কুলের ছাত্রীদের কাছ থেকেই আসেনি। স্কুলের শিক্ষিকারাও একই অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তৎক্ষণাৎ স্কুল পরিদর্শককে জানানো হয়। উনি থানায় অভিযোগ জানাতে বলেছিলেন। সেই মতো থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। প্রধান শিক্ষক হিসাবে আমার দাবি, ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক। দোষীর শাস্তি চাই।’’