বিধানসভায় ভোট দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: এএনআই।
বিধানসভার অলিন্দে তৃণমূল বিধায়কেরা। ছবি: এএনআই
২৯৩ জন বিধায়কের মধ্যে ২৯১ জন বিধায়ক ভোট দিয়েছেন। ভোট দিতে আসেননি তৃণমূলের বিধায়ত রফিকুল ইসলাম মণ্ডল। ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও অনুপস্থিত। তবে ভোট শেষ হতে এখনও কিছু সময় বাকি। ৫টা পর্যন্ত চলবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটদান প্রক্রিয়া। বিধানসভা সূত্রে খবর, বাকি সব বিধায়কেরই ভোট দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিতে বিধানসভায় এলেন মুকুল রায়। কৃষ্ণনগর উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক বিকেল চারটে নাগাদ আসেন ভোট দিতে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভার অলিন্দে হাসিমুখেই দেখা যায় মুকুলকে।
দুপুর ২টোর সময়েই বিধানসভায় পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে ভোট দিতে আসেন ঠিক ৩টে ৩৩ মিনিটে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ঠিক ৩টে ৪০ মিনিটে ভোট দিয়ে বেরিয়েও যান মমতা।
সংসদ চত্বরে ডেরক-মদন আলোচনা। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভায় একে একে এসে পৌঁছচ্ছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন, মদন মিত্র, জুন মাল্যরা। পরে এলেন অর্জুন সিংহও। যিনি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েও সম্প্রতি সুর বদলেছেন।
জুন মাল্য। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির পরিষদীয় দলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বিজেপি বিধায়কেরা আদিবাসী সংস্কৃতির প্রতীক পানচি পরে ভোট দিচ্ছেন। আবার তাঁদের পোলিং এজেন্টও পানচি পরেছেন।
বিধানসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন ভোট দিতে। তবে এসে প্রথমে গেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে।
বিজেপি শিবিরের অনেকেই বলেছিলেন জনজাতিদের প্রতিনিধি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দিতে পারেন তৃণমূলের আদিবাসী বিধায়ক, সাংসদরা। সোমবার নির্বাচনের সকালে তৃণমূলের বীরবাহা হাঁসদা, জ্যেৎস্না মান্ডিরা জানিয়ে দিলেন, তাঁরা দ্রৌপদীকে সমর্থন করেন না, কারণ তিনি নিজেকে হিন্দু বলে দাবি করেছেন, আদিবাসীদের কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম নেই।
ভোটের লাইনে দাঁড়ানো তৃণমূলের কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি দুই রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর ভোট শতাংশ নিয়ে কি কিছু বলবেন? জবাবে মহুয়া জানালেন, তিনি কোনও মন্তব্য করতে চান না। দলের সাংসদদের সঙ্গে ভোট দেওয়ার লাইনে দাঁড়ানো মহুয়া জানান, তাঁর এটিই তাঁর প্রথম রাষ্ট্রপতি ভোট।
ভোটের প্রচারে তিনি অনেক কথাই বলেছেন। ভোটের দিনও বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যশবন্ত সিন্হা বলেন, ‘‘যদি গণতন্ত্র চান, যদি এজেন্সির ছড়ি ঘোরানো থেকে মুক্তি চান তবে আমাকে ভোট দিন।’’
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যেই তৃণমূল বনাম বিজেপি তরজা শুরু। ফিরহাদের ক্রস ভোটিংয়ের মন্তব্যের জবাব দিলেন বিজেপি নেত্রী এবং বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বললেন, ‘‘ওঁরা যা-ই বলুন আমরা আমাদের ভোট দ্রৌপদী মুর্মুকেই দেব।’’ তবে অগ্নিমিত্রার মতে, তৃণমূলের অনেকে বরং দ্রৌপদীকেই ভোট দিতে ইচ্ছুক।
বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, শাসকদলের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে জিততে চলেছেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।
কলকাতার মেয়র এবং রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দাবি, ক্রস ভোটিং হবে বাংলায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে। তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির অনেকেই বিরোধীদের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী যশবন্ত সিন্হা ভোট দেবেন। প্রসঙ্গত, সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগেই রবিবার বিজেপির সমস্ত বিধায়কদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল নিউ টাউনের একটি হোটেলে। সেখান থেকেই সোমবার সকালে সরাসরি বিধানসভায় আসেন তাঁরা।
বিধানসভার বাইরে বিজেপি বিধায়কেরা। ছবি: টুইটার
বিজেপি বিধায়কদের প্রত্যেকেরই গলায় হলুদ রঙের উত্তরীয়। জানা গেল এগুলি আদিবাসী সংস্কৃতির প্রতীক। যেহেতু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে শাসক দল বিজেপির প্রার্থী দ্রৌপদী জনজাতির প্রতিনিধি। তাঁকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাতে আদিবাসীদের ব্যবহৃত কাপড়ের উত্তরীয় গলায় পড়ে বিধানসভায় এসেছেন বিজেপির বিধায়কেরা।
বিধানসভার বাইরে ভোটের লম্বা লাইনে হাজির তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সাংসদরাও। ছিলেন ইন্দ্রনীল সেন, শশী পাঁজা, মহুয়া মৈত্ররা।
নিউটাউনের হোটেল থেকে বাসে করে বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে আসা হয়েছে বিধানসভা ভবনের বাইরে। দেখা গেল মূল গেটের বাইরে বিজেপি বিধায়কেরা লাইন দিয়ে ঢুকছেন ভিতরে। রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।