Pradhan Mantri Aawas Yojna

আবাস-সমীক্ষায় হেনস্থা, ধরপাকড়ও

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকার (আবাস প্লাস) জন্য সমীক্ষায় গিয়ে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৬:৪১
Share:

প্রশাসনের তরফে তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ফাইল চিত্র।

নিরাপত্তার প্রশ্নে আবাস যোজনার সমীক্ষার কাজে বেঁকে বসেছেন আশাকর্মী ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একটা বড় অংশ। প্রশাসনের তরফে তাঁদের ভরসা জোগানো হচ্ছে। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে পুলিশ। হেনস্থার অভিযোগে ধরপাকড়ও হচ্ছে। তবে হেনস্থা থেমে নেই। ভয়ও পুরোপুরি কাটেনি।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকার (আবাস প্লাস) জন্য সমীক্ষায় গিয়ে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী প্রহৃত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে। শুক্রবার ওই ঘটনার পরে শম্পা মজুমদার নামে ওই কর্মীর দাবি, “কয়েক জন এসে তাদের কথা মতো রিপোর্ট করতে বলে। রাজি না হওয়ায় গালিগালাজ, মারধর করেছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান হাজি সিদ্দিক মোল্লার পাল্টা দাবি, ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বাড়ি বাড়ি না যাওয়ায় কিছু সমস্যা হয়েছিল। পরে তাঁকে বিডিও-র কাছে পাঠানো হয়। শনিবার বাদুড়িয়ায় এক অনুষ্ঠানে এসে ঘটনার প্রতিবাদ করে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বিরোধী দলের দু’টো ছেলে এতে জড়িত। তারা পরে বিডিও-র সামনে ওই মহিলার কাছে ক্ষমা চেয়েছে।”

কড়া পদক্ষেপও হচ্ছে। ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে সঙ্গে নিয়ে সমীক্ষায় গিয়েও হেনস্থার শিকার হয় আশাকর্মী ও পঞ্চায়েত কর্মীকে। তালিকা ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এক স্পেশাল হোমগার্ডের বিরুদ্ধে। পরে বিডিও-র অভিযোগের ভিত্তিতে সেই স্পেশাল হোমগার্ডকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে, যাতে আগামী দিনে কারও এমন সাহস না হয়।’’ শনিবার দুপুরে হুগলির গোঘাটেও তথ্য যাচাইয়ে যাওয়া এক পঞ্চায়েত কর্মীকে হেনস্থার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

অঙ্গনওয়াড়ি বা আশাকর্মীরা সমীক্ষায় যেতে ভয় পেলে সঙ্গে পুলিশ যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জলপাইগুড়ির পুলিশ-প্রশাসনও। তবে কোথায়, কে বা কারা হুমকি দিচ্ছে, তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে হবে। যদিও আশাকর্মী সংগঠনের জেলা সভাপতি নীহার বেগম বলছেন, “পরে, পুলিশ না থাকলে কী হবে? আর এটা শুধু সমীক্ষা নয়, রীতিমতো তদন্ত। এ কাজ আমাদের পক্ষে করা সম্ভবই নয়।” ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে মালদহ ও দুই দিনাজপুরের অঙ্গনওয়াড়ি, আশাকর্মীদের একাংশ। ভয় ভাঙাতে আসরে নেমে রায়গঞ্জ ও ইসলামপুরে মহকুমাশাসকরা আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষায় যান।

আবাস প্লাসে সমীক্ষার কাজ খতিয়ে দেখতে এ দিন পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ায় এসেছিলেন রাজ্যের পর্যবেক্ষক তথা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম সচিব সুদীপ সরকার। সমীক্ষার কাজে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নজরে রেখেছেন। সে রকম কোনও সমস্যা পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু ভাবেই কাজ হচ্ছে।” অনেক অযোগ্য ব্যক্তির নাম উপভোক্তার তালিকায় রয়েছে ও তা বাদ দিতে গেলে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সমীক্ষার কাজে যুক্ত আশাকর্মীরা। যুগ্ম সচিবের স্পষ্ট বার্তা, ‘‘যাঁরা বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নন, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ যাবেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement