Ram Mandir Inauguration

সৌজন্য রামমন্দির, কলকাতার কুমোরপাড়ায় অকাল দীপাবলি

২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। ওই দিন অযোধ্যায় ভিড় না জমিয়ে বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানোর অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৫:৩০
Share:

চাহিদা প্রচুর থাকায় মাটির প্রদীপ তৈরিতে চূড়ান্ত ব্যস্ততা কুমড়দের, উল্টোডাঙ্গা এলাকায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

অসময়ে লাভের আলো দেখার আশা করছেন শহরের প্রদীপশিল্পীরা। অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে মাটির প্রদীপের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কুমোরপাড়ায়।

Advertisement

২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হবে রামমন্দিরের। ওই দিন অযোধ্যায় ভিড় না জমিয়ে বাড়িতে প্রদীপ জ্বালানোর অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই অনুরোধ অসময়ে আলো এনেছে কলকাতার কুমোরপাড়ায়। গত কয়েক সপ্তাহে ভিন্‌ রাজ্য থেকে যেমন একের পর এক বরাত এসেছে, তেমনই এ রাজ্যেও চাহিদা বেড়েছে মাটির প্রদীপের। জানা যাচ্ছে, মন্দির উদ্বোধনের মাস খানেক আগেই উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বরাত পেয়েছেন প্রদীপশিল্পীরা। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০ লরি প্রদীপ (একটি লরিতে অন্তত এক লক্ষ প্রদীপ পাঠানো হয়) বারাণসী-সহ উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। গুজরাত, রাজস্থানের ব্যবসায়ীদের বরাত অনুযায়ীও প্রদীপ পাঠানো হয়েছে। প্রদীপশিল্পী কৈলাস প্রজাপতির কথায়, ‘‘এই সময়ে সাধারণত মাটির প্রদীপের চাহিদা থাকে না। তবে এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। ডিসেম্বরের শেষ থেকে একের পর এক অর্ডার এসেছে। এ রাজ্যেরও অনেকেই এখন প্রদীপের খোঁজ করছেন।’’

উত্তর কলকাতার উল্টোডাঙা-সহ কবিরাজ বাগান, গোরাপদ সরকার লেন, কৃত্তিবাস মুখার্জি লেন-সহ একাধিক জায়গায় মাটির প্রদীপ তৈরি হয়। দীপাবলির আগে ভিন্‌ রাজ্যে মাটির প্রদীপ পাঠান এখানকার শিল্পীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাংলার কারুকার্য করা মাটির প্রদীপের চাহিদা ভিন্‌ রাজ্যে যথেষ্ট। প্রতি বছর দীপাবলির আগে সেখানকার ব্যবসায়ীরা এসে অর্ডার দিয়ে যান। দীপাবলি মিটতেই সেই ব্যস্ততা কার্যত উধাও হয়ে যায়। বরং পেট ভরাতে বিকল্প মাটির ভাঁড়, ঘট থেকে শুরু করে অন্যান্য জিনিস তৈরি করতে হয় শিল্পীদের। কিন্তু এ বছর মরা গাঙে কার্যত জোয়ার এনেছে রামমন্দিরের উদ্বোধন। শিল্পীরা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন গড়নের কারুকাজ করা প্রদীপের চাহিদা সব থেকে বেশি। মাপ অনুযায়ী, ১০০ প্রদীপের সেট ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

Advertisement

তবে হাতে সময় কম আর পর্যাপ্ত কারিগর না থাকায় কিছু বরাত ছেড়ে দেওয়ার আক্ষেপ রয়েছে শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের একাংশের। এক প্রদীপশিল্পীর কথায়, ‘‘মেদিনীপুর, নদিয়া থেকে কারিগররা আসেন দীপাবলির আগে। কাজ করে বাড়ি ফিরে যান। কারিগরদের অনেকে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ফলে সবাইকে এখন পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ইচ্ছে থাকলেও সব কাজ করে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।’’

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল আর্ট পট মেকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি মোহনলাল প্রজাপতি বলেন, ‘‘ভিন্‌ রাজ্যে আমাদের শিল্পী এবং তাঁদের তৈরি মাটির জিনিসের কদর বেড়েছে, এটাই বড় কথা। আমাদের ব্যবসা বলতে কয়েক মাসের। কিন্তু এখন অসময়ে বরাত আসছে, প্রত্যেকে কিছু পয়সা হাতে পাচ্ছেন, মন্দ কী?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement