সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত লোকসভার স্পিকার থাকার পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন। এ বার তিনি বিদায় নিলেন জীবন থেকেও। ৮৯ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে সোমবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার এবং সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের।
তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই দেশজুড়ে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমেছে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে তাঁর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন এবং তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ দিন তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘লোকসভার স্পিকার হিসাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তার শরীরও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, তা সত্ত্বেও যখনই গণতন্ত্র আক্রান্ত হয়েছে, সেখানেই তিনি প্রতিবাদে দাঁড়িয়েছেন। সাধ্যমতো করেছেন।যদিও দলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত তাঁর সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু কিছু যায় আসে না। তিনি দলের ঊর্ধ্বে। আমরা তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। দলের তরফে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হলে জানানো হবে।’’
আরও পড়ুন: দলের নির্দেশ অমান্য করেছিলেন সংসদীয় দায়িত্ববোধ থেকেই
নরেন্দ্র মোদী টুইট করেন, ‘প্রাক্তন সাংসদ এবং স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ভারতীয় রাজনীতির একজন দিকপাল। আমাদের গণতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করেছিলেন তিনি। দরিদ্র এবং দুর্বলের জন্যও তিনি ছিলেন শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।’ তাঁর পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান মোদী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেন, ‘প্রাক্তন লোকসভা স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু আমাদের জন্য খুব বড় ক্ষতি। তাঁর পরিবার এবং সমর্থকদের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও টুইট করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন।
তাঁর মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘অসাধারণ সাংসদ ছিলেন তিনি। দরিদ্রদের পাশে থাকতেন। এবং সংসদের গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করার জন্য স্পিকার হিসাবে তাঁর অবদান গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে হারালাম’। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী জানান, ‘শুধুমাত্র লোকসভার স্পিকারই ছিলেন না, তিনি নিজেই একটা প্রতিষ্ঠান ছিলেন’।
আরও পড়ুন: প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ লেখেন, ‘সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবরে আমি শোকাহত। সংসদীয় রাজনীতিতে তিনি ছিলেন প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। তাঁর দীর্ঘ সাংসদ জীবন লোকসভার ঐতিহ্য বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁর পরিবার এবং সমর্থকদের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
টুইট করে সমবেদনা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্রী পি চিদম্বরম, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্রী নির্মলা সীতারমন সহ আরও অনেকে। তবে পশ্চিমবঙ্গ এবং পুদুচেরির রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে টুইট করলেও এখনও পর্যন্ত সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।