সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে টানা ২৬ দিন অনশন করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কর্মসূচিকে নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ারে মাইলফলক হিসাবেই বারেবারে দেখিয়ে এসেছেন তিনি। কিন্তু তাঁর জমানাতেই এ বার বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনশন শুরু করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার হতে হল গণ-আন্দোলনের কর্মীদের!
বিদ্যুতের বর্ধিত মাসুল প্রত্যাহারের দাবিতে শনিবার বিকাল থেকে সিইএসসি-র প্রধান দফতর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অনশনে বসেন ‘বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধি বিরোধী গণ-আন্দোলনে’র কর্মীরা। রবিবার দুপুরে আচমকাই অনশনরত ১৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিসি (সেন্ট্রাল) বাস্তব বৈদ্যের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী এ দিন তাঁদের অনশন তুলে নিতে বললে তাঁরা রাজি হননি। তখনই পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে ১০ জন জামিন নিলেও প্রসেনজিৎ বসু, জিকো দাশগুপ্ত, তনভীর আহমেদ খান, পায়েল চৌধুরী-সহ ৮ জন তা নিতে অস্বীকার করেন। তাঁদের প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়। জেলেও তাঁরা অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। বাকি আন্দোলনকারীরা এ দিন বিকালে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের সামনে থেকে মিছিল করে ধর্মতলা চত্বরে আসেন। পরে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তাঁরা পথসভা করেন। আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসেন বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি-র যুব নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আন্দোলনকারীদের তরফে শুভনীল চৌধুরী বলেন, তাঁরা অনশন করার জন্য আগে থেকেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন। অথচ পুলিশ তাঁদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘বর্তমান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ধর্মতলায় মঞ্চ বেঁধে রাস্তা আটকে ২৬ দিন অনশনে বসেছিলেন। অথচ সেই পুলিশমন্ত্রী অনশন করার অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন!’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘অনশন কী ভাবে করতে হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়েছিলেন। তাঁর অনশন ছিল রাস্তার একধারে। আর এখন একটা সংস্থার দফতরের সামনে অনশনের নামে প্রহসন হচ্ছিল!’’