পুলিশে এবং সেনাবাহিনীতে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য উৎসাহী আদিবাসী তরুণ-তরুণীদের কোচিং করাবে পুলিশ। জনসংযোগ বাড়াতে উত্তর দিনাজপুর জেলা পুলিশ ‘প্রগতি’ নামে এই প্রকল্পটি চালু করতে চলেছে। প্রাথমিক ভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত পাঁচটি থানা এলাকা থেকে ১১০ জনকে বাছা হয়েছে। যাঁরা পুলিশ বা সেনাবাহিনী ছাড়া অন্য কিছু করতে চান তাঁদের ড্রাইভিং শেখানো হবে।
সম্প্রতি পুলিশে কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছে। তাতে উত্তীর্ণদের ‘ফিজিক্যাল ফিটনেস’ পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ে বসতে হবে। তাঁদের পরামর্শ এবং প্রস্তুতিতেও সাহায্য করা হবে এই প্রকল্পে। ‘প্রগতি’ প্রকল্পের বাইরে জেলায় ৫০টি ওপেন টিচিং সেন্টার চালু হবে। সেখানে এলাকার স্কুলপড়ুয়াদের টিউশনের ব্যবস্থা করা হবে। সিভিক পুলিশদের একাংশ সেখানে পড়াবেন। আজ, বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ পুলিশ লাইনে প্রকল্পগুলোর আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে।
যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি এ ধরনের কাজে যুক্ত হওয়ায় পুলিশের নিজস্ব কাজে সমস্যা তৈরি হচ্ছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের একাংশের মধ্যে। জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘জনসংযোগ বাড়াতেই এ ধরনের উদ্যোগ। জেলা পুলিশের তরফেই এই পরিকল্পনা সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া আদিবাসীদের জন্য, তাঁদের তরুণ প্রজন্মকে কাজের সুযোগ করে দিতে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইটাহার, হেমতাবাদ, কালিয়াগঞ্জ এবং রায়গঞ্জে আদিবাসী অধ্যুষিত অনেক এলাকা রয়েছে। কিছু রয়েছে করণদিঘি থানা এলাকাতেও। ওই সমস্ত এলাকা থেকে উৎসাহীদের আনতে পুলিশের মধ্যে থেকেই ২৬ জনের ‘কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ’ ঠিক করা হয়েছে। রায়গঞ্জ পুলিশ লাইনে সপ্তাহে দু’দিন করে উৎসাহীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। ডিএসপি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পুলিশ সুপার তাঁদের ক্লাস করাবেন।
গাড়ি চালানো যাঁরা শিখবেন তাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি এবং বেসরকারি পরিবহণ সংস্থায় গাড়ি চালকের কাজের সুযোগ বাড়ছে বলে পুলিশের দাবি।
পুলিশ জানিয়েছে, কনস্টেবলের পরীক্ষায় যাঁরা উত্তীর্ণ হবেন তাঁরা ফিজিক্যাল ফিটনেস এবং ইন্টারভিউয়ে বসার পরামর্শ নিতে চাইলে পুলিশের দেওয়া নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ বা ই-মেলে যোগাযোগ করবেন। স্কুল পড়ুয়াদের টিউশনের জন্য নির্দিষ্ট করা স্কুলগুলোতে ছুটির পর পড়ানো হবে।
সিভিক পুলিশদের একাংশ যারা পড়াতে ইচ্ছুক, তাঁরা সেখানে শেখাবেন। আপাতত প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের সপ্তাহে ২/৩ দিন করে পড়াবেন। সে জন্য সিভিক পুলিশদের কিছু সাম্মানিক দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।