Coronavirus in West Bengal

মাস্ক নেই বলে মার, পাল্টা ইটে জখম পুলিশও

বাইক চালাচ্ছিলেন নিউটন আক্তার খান নামে এক যুবক। পিছনে ছিলেন টনিক খান। পুলিশ জানতে চায়, মুখে মাস্ক নেই কেন? এর পরেই তর্কাতর্কি বেধে যায়।

Advertisement

অমিতাভ বিশ্বাস

হোগলবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২১ ০৭:২২
Share:

ভাঙচুর হওয়া পুলিশের গাড়ি। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে পুলিশ জানতে চেয়েছিল, মুখে কেন মাস্ক নেই। তা নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল নদিয়ার হোগলবেড়িয়ায়। বাইক আরোহী এক যুবককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ক্ষিপ্ত জনতার ছোড়া ইটে পুলিশের চারটি গাড়ির কাচ ভেঙেছে। দুই পুলিশ অফিসার, তিন পুলিশকর্মী ও পুলিশের দুই গাড়ির চালক চোট পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বেগতিক দেখে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার সময়ে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় এক মহিলা জখম হন বলেও এলাকার মানুষের অভিযোগ রয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বেলা ১১টা কুচাইডাঙা গ্রামের মাঠপাড়ায় টহল দিচ্ছিল হোগলবেড়িয়া থানার চারটি গাড়ি। গ্রামের মুদির দোকানে সাবান কিনতে গিয়ে তাদের মুখোমুখি পড়ে যান বাইক আরোহী দুই যুবক। বাইক চালাচ্ছিলেন নিউটন আক্তার খান নামে এক যুবক। পিছনে ছিলেন টনিক খান। পুলিশ জানতে চায়, মুখে মাস্ক নেই কেন? এর পরেই তর্কাতর্কি বেধে যায়।

বছর সাতাশের নিউটনের দাবি, “আমার মুখে মাস্ক ছিল। পুলিশ যখন আমাদের আটকায়, আমার বন্ধুর মুখে মাক্স ছিল না, হাতে ছিল। পুলিশ বলে, ড্রাইভিং লাইসেন্স কোথায়, মাথায় হেলমেট নেই কেন? আমি জানাই, খুব কাছেই আমার বাড়ি, তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এসেছি।” তাঁর অভিযোগ, লাইসেন্স না নিয়ে হেলমেট না পরে বেরনো ভুল হয়েছে, বলে স্বীকার করে নেওয়া সত্ত্বেও পুলিশের কয়েক জন তাঁকে গালাগালাজ করতে থাকে। তিনি ফোনে গালিগালাজের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে গেলে প্রথমে তাঁকে লাথি মারা হয়, তার পরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।

Advertisement

দু’এক ঘা খেয়েই টনিক পালিয়ে গিয়েছিলেন। একা পড়ে গিয়েছিলেন নিউটন। নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করে আঞ্জুরা বিবি অভিযোগ করেন, “পুলিশ ছেলেটাকে অমানুষিক ভাবে মারছিল। বারবার বলছিলাম, ‘ও ভাবে মারবেন না, ও মরে যাবে।’ কিন্তু কে কার কথা শোনে!” প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামের শাহজাহান শেখ, মুক্তি বিবিরা জানান, এর পরেই গ্রামের মানুষ খেপে ওঠে। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু হয়। অবস্থা জটিল হচ্ছে বুঝে পুলিশে গাড়ি ওই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যেতে গেলে মাসুদা বিবি নামে বছর চল্লিশের এক মহিলাকে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। তাঁকে এবং নিউটনকে প্রথমে স্থানীয় করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

হোগলবেড়িয়া থানা সূত্রে অবশ্য কাউকে মারধরের কথা অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তর্কাতর্কির মধ্যেই কিছু লোক ইট ছুড়তে শুরু করেছিল। গাড়িতে ধাক্কা খেয়ে কারও জখম হওয়ার কথাও তাদের জানা নেই। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পাল বলেন, “এমন ঘটনা কেন ঘটল, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement