বদলি করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে, বুধবার রাজ্য পুলিশের ডিজি-র কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ। শুক্রবার সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করল রাজ্য সরকার। ইস্তফা দিলেও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ।
নবান্নের খবর, শাসক দল তথা সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের পদ থেকে ভারতীকে যে ছেঁটে ফেলা হবে, প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে সেই সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল আগেই। এ দিন তাতে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়ল।
তবে নবান্ন তাঁকে ছেড়ে দিলেও ২৩ বছরের কর্মজীবন থেকে এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না ভারতী।
কারণ, আইপিএস ভারতীর নিয়োগকর্তা রাষ্ট্রপতি। তাই রাজ্য সরকার তাঁর পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করলে তা কেন্দ্রকে জানাতে হবে। এটাই দস্তুর। নবান্নের খবর, রাজ্যের সিদ্ধান্ত শীঘ্র কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে সাধারণ ভাবে রাজ্যের মতামতে আপত্তি করে না কেন্দ্র।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, আইপিএস স্তরের কোনও অফিসার ২০ বছর চাকরির পরে ইস্তফা দিলে এবং তা গৃহীত হলে তিনি অবসর-পরবর্তী প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধার সবটুকুই পান। ভারতীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হওয়ার কথা নয়।
ভারতীর পদত্যাগপত্র গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নবান্নের কর্তারা। সম্প্রতি সবং বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই প্রাক্তন পুলিশ সুপার নির্বাচন কমিশনের অধীনে থেকেও ৮৯ জন পুলিশকর্মীকে বদলি (২৩ নভেম্বর) করেছিলেন। নবান্ন ঠিক করেছে, ওই ৮৯ জনকে তাঁদের আগের পদে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। জেলার বর্তমান পুলিশ সুপারের কাছে সেই নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, পুলিশ সুপার থাকাকালীন ভারতীর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠছিল। শুধু বিরোধী পক্ষ নয়, শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরাও ভারতীর ‘ক্ষমতা প্রয়োগ’-এর নমুনা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিলেন। বকলমে তিনিই ছিলেন জেলা তৃণমূলের ‘মুখ’। পদ ছাড়ার পরেও বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে তদন্তের মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে।