পুলিশ বারবার তাঁর বাড়িতে গিয়েও পায়নি। অথচ, সদ্যোজাতের আঙুল কেটে বাদ দেওয়ার ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত নার্স রাখি সরকার বালুরঘাটের চকভৃগু এলাকার বাড়িতেই লুকিয়ে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবারই হাসপাতালের তরফে এক স্বাস্থ্যকর্মী তাঁর বাড়িতে গিয়ে রাখিদেবীর হাতেই সাসপেনশনের চিঠি ধরিয়ে দেয় বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। অথচ পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না বলে আইসি থেকে পুলিশ সুপার সকলেই জানিয়েছেন।
রবিবার রাতে স্যালাইনের চ্যানেল কাটতে গিয়ে সদ্যোজাতের আঙুল কেটে ফেলেন বালুরঘাট হাসপাতালের নার্স রাখিদেবী। সোমবার শিশুটির পরিজনেরা থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ রোজই অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে পায়নি বলে দাবি করেছে। এ দিকে, স্বাস্থ্যকর্মী গিয়ে খোদ রাখিদেবীকে দিয়ে সাসপেনশনের নোটিশ সই করানোর ঘটনা সামনে আসায় পুলিশি তদন্ত নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের আরেকটি সূত্রে অবশ্য খবর, রাখিদেবীকে গ্রেফতার করা হলে কেবল বালুরঘাট নয় উত্তরবঙ্গ জুড়ে সরকারি হাসপাতালের নার্সেরা আন্দোলনে নামবেন বলে নার্স ও চিকিৎসকদের একাংশ মহল থেকে পাল্টা প্রচার করে চাপ তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই নার্সের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব স্পষ্ট করে দেওয়ার পরেও সেই চাপেই কি তাহলে হার মানছে পুলিশ? শুক্রবার সন্ধ্যায় বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা অভিযুক্ত নার্সের বাড়িতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্যকর্মী কীভাবে কোথায় তাঁকে সাসপেন্ডের চিঠি ধরিয়েছেন তা জানা নেই।’’
দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে অবশ্য বলেন, ‘‘বুধবার নার্সকে না পেয়ে সাসপেনশনের চিঠি তার বাড়ির বারান্দায় সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। তার ফটো তুলে রাখা হয়। পরে এক স্বাস্থ্যকর্মীকে পাঠানো হয়েছিল। বিকেল নাগাদ ওই স্বাস্থ্যকর্মী রাখিদেবীকে বাড়িতে পেয়ে যান। সে সময় ওই নির্দেশ তার হাতে ধরিয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয় বলে হাসপাতালের তরফেও আমাকে জানানো হয়েছে।’’
বালুরঘাট থানা থেকে রাখিদেবীর বাড়ির দুরত্ব এক কিলোমিটারেরও কম। শুক্রবার চকভৃগু এলাকায় নদীপাড় গার্লস হাইস্কুল পাড়ায় রাখিদেবীর পাড়ায় গিয়ে জানা যায়, রাতে তিনি বাড়িতে থাকতেন। দিনের বেলা তিনি তার বাবার বাড়ি বালুরঘাটের নাজিরপুর এলাকায় চলে যেতেন। প্রতিবেশিরা তাকে সন্ধের পর বাড়িতে ঢুকতে দেখেছেন। এ দিন গিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবারের পর থেকে রাখিদেবীকে আর দেখা যায়নি। এ দিকে আগাম জামিনের জন্য রাখিদেবীর স্বামী বালুরঘাট আদালতে গেলেও কোনও আইনজীবী তাঁর হয়ে মামলা নিতে রাজি হননি বলে জানা গিয়েছে।