প্রতীকী ছবি।
বেহালার বাসিন্দা এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হল বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কোচবিহারের একটি গ্রাম থেকে। শুক্রবার গভীর রাতে দিনহাটার সাহেবগঞ্জ থানার সাদিয়ালের কুঠি এলাকার একটি বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতায় বেহালার পর্ণশ্রী থানা এলাকায় তার বাড়ি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১০ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল মেয়েটি। তার পরে নবম শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। ওই দিনই পরিবারের তরফে পর্ণশ্রী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। পরিবারের লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এক যুবকের সঙ্গে দেখা করতে কোচবিহারের দিনহাটায় চলে গিয়েছে সে। সেই যুবকের নাম-ঠিকানা জোগাড় করে শুক্রবার তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
কিন্তু কী করে ওই কিশোরীর পরিচয় হল সাদিয়ালের কুঠির যুবকের সঙ্গে?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময়ে কলকাতায় গাড়ি চালকের কাজ করতেন ওই যুবক। কিশোরীর বাড়ির কাছাকাছি থাকতেন তিনি। সেই সূত্রেই তাঁদের পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে পুলিশের কাছে ওই কিশোরী দাবি করেছে। কিছু দিন আগে চাকরি ছেড়ে ওই যুবক কলকাতা থেকে কোচবিহারে নিজের বাড়ি ফিরে যান। তাঁর সঙ্গে দেখা করতেই ১০ তারিখ বাড়ি থেকে পালায় ওই কিশোরী। একাই কোচবিহার রওনা হয় সে। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চেপে প্রথমে এনজেপি স্টেশনে পৌঁছয় কিশোরী। সেখান থেকে বাসে করে সটান কোচবিহার যায়। পরিচিত এক জনকে ফোন করে সে কোথায় যাচ্ছে তা জানিয়েও দেয় কিশোরী। এ সবের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করেন সাহেবগঞ্জ থানার ওসি দীপোজ্জ্বল ভৌমিক। পর্ণশ্রী থানার সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদানের ভিত্তিতে ঘটনাটি স্পষ্ট হয়।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে যুবকের সঙ্গে দেখা করতে কলকাতার বাড়ি ছেড়ে প্রত্যন্ত গ্রামে এসেছিল ওই কিশোরী, তাঁকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। যুবকের বৃদ্ধা মা ওই ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। ওই কিশোরীর পরিবারের তরফেও কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়নি। শনিবার ওই কিশোরীকে দিনহাটা মহকুমা শাসকের আদালতে তোলা হয়। কিশোরীর এক আত্মীয় বলেন, ‘‘বাড়ির মেয়েকে সুস্থ, ভাল ভাবে ফিরে পেয়েছি। এটাই বড় ব্যাপার।’’ পুলিশের এক কর্তার কথায়, “রাজা হিন্দুস্তানি দেখেছিলাম। এ যেন সেই ছবির মতো। মেয়েটি যে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েনি, সেটাও কম নয়।”