এখানেই খুন হয়েছেন কনস্টেবল নবকুমার হাইত। —নিজস্ব চিত্র।
গুলি চালালো, বোমাও ছুড়লো। আর তার পরেই পুলিশের নাকের ডগা দিয়েই নির্দিধায় ছুটে পালিয়েও গেল! পরিণতি? দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে প্রাণ খোয়াতে হল এক পুলিশ কর্মীকে।
বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার কাছে এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তুলে দিল রক্ষকের ভূমিকা নিয়ে।
কী ঘটেছিল?
ওই দিন রাত পৌনে ১০ টা নাগাদ রাত প্রহরা চালাচ্ছিল ৪ জন পুলিশের একটি দল। তাঁদের মধ্যে এক জন এসআই এবং বাকি তিন জন কনস্টেবল। তাঁরা গাড়িতেই ছিলেন। হলদিয়া-মেচেদা রোডে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে রাস্তার পাশে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দু’জনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। সন্দেহ হয়। এক জনের কাছে একটি নীল রঙের ব্যাগও ছিল। গাড়ি থেকে নেমে তাদের কাছে আসে ৪ পুলিশ কর্মী। জানতে চায় এত রাতে এখানে তারা কী করছে? আর ব্যাগেই বা কী রয়েছে?
পুলিশ জানায়, এর পরেই পালাবার চেষ্টা করে তারা। ধাওয়া করলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক দুষ্কৃতী। নবকুমার হাইত (৪৩) নামে এক কনস্টেবলের মাথার বাঁ দিকে গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। অন্য জন পুলিশের দিকে বোমা ছুড়ে দেয়। আর এই সুযোগেই ব্যাগ আর বন্দুক ফেলে ছুটে পালিয়েও যায় তারা।
অভিযুক্ত কর্ন।
পরে পুলিশের একটা দল সারা রাত তল্লাশি করার পরেও খোঁজ পায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান আহত কনস্টেবল। দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া ব্যাগ থেকে দুটি দেশি বোমা উদ্ধার করেছে। ঘটনায় কর্ন মণ্ডল নামে দুষ্কৃতীকে সন্দেহ করছে পুলিশ। কর্নেরও খোঁজ মেলেনি।
ওই রাতের এই ঘটনা মনে করিয়ে দিল ২০১৪ সালের হরিদেবপুরের ঘটনাটি। নেহাতই পারিবারিক কোন্দল সামলাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক হোমগার্ডের। তখন পুলিশেরই বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে হোমগার্ডকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল। এই ক্ষেত্রে অবশ্য পুলিশের থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি। তবে, গুলি চালিয়ে চার-চার জন পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। যেখানে পুলিশের থেকে সংখ্যাতেও অর্ধেক ছিল দুষ্কৃতীরা।