নিহত বন্ধুপ্রকাশের ভাই বন্ধুকৃষ্ণ ঘোষ।
পাঁচ দিন কেটে গেল। এখনও পর্যন্ত দাদা, বৌদি তাদের ছোট ছেলেটা— এক দুপুরে শেষ হয়ে যাওয়া গোটা পরিবারটার হত্যার কোনও সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ। গ্রেফতার হয়নি এক জনও। শুধু আশ্বাস আর দফায় দফায় আটক এবং জেরা। এ ভাবে খুনের কিনারা হয়! শনিবার রাত একটা পর্যন্ত জিয়াগঞ্জ থানায় আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এমনকি আটক সৌভিক বণিকের সামনে বসিয়েও কথা বলে পুলিশ। আমার তো বার বার মনে হয়েছে পুলিশ কর্তাদের কোনও চাড়ই নেই। পুলিশের কাছে অনেক কথাই সৌভিক মিথ্যে বলছে। আমি পুলিশের সামনেই তার প্রতিবাদ করেছি। এক বার তো প্রায় ঝগড়াই হয়ে গেল। ছেলেটা কি গুছিয়ে মিথ্যে বলে! আজও সি আইডি’র অফিসারেরা আমাকে ও পরিবারের লোকজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। শনিবার সারা দিন ধরে পুলিশ গ্রামের বাড়ি সাহাপুরে ঘুরে বেরিয়েছে। সেখানেও শ’খানেক লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রবিবার সাগরদিঘি থানাতেও নিহত বন্ধুপ্রকাশের বন্ধু ও পরিচিতদের জেলার পুলিশ সুপার-সহ কয়েক জন পুলিশ অফিসার সন্ধে পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। নিট ফল শূন্য। তদন্তকারী সিআই ডি’র এক অফিসার আশ্বাস দিয়েছেন রবিবারও, তাঁদের উপর ভরসা রাখতে বলেছেন, খুনিরা ধরা পড়বেই বলেছেন। কিন্তু সত্যি বলছি, কেমন একটা গয়ংগচ্ছ মনোভাব। আমার ভাল লাগেনি। আমি তো নিরাপত্তারও অভাব বোধ করছি। বুধবার রাতে মোটরবাইক চালিয়ে সাহাপুর গ্রামে যাওয়ার পথে বেণীপুরের কাছে গুলি চালানো হয়েছে আমার উপরে, বেঁচে গেছি বরাত জোরে। আমি শুধু নয়, গোটা পরিবার আতঙ্কে রয়েছে আমাদের। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জেরবার সাহাপুরের মানুষও। আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরাও। নিহত বন্ধুপ্রকাশ ছিল আমার দাদা নয়, বন্ধুর মতো। ৫ দিন কাটার পরেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এটা প্রমাণিত, এখনও অন্ধকারে হাতড়ে চলেছেন তারা। আমরা বার বার বলেছি, নিহতের পরিবার কখনও কোনও রাজনীতি করেনি। তাই বিশ্বাস করি এই খুনের পিছনে রাজনীতি নেই।
নিহত বন্ধুপ্রকাশের ভাই