মুকুল রায়। —ফাইল চিত্র
প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিয়ো রেকর্ডিং করল পুলিশ। সোমবার দুপুরে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই জিজ্ঞাসাবাদ চলে। রেলের একটি কমিটির সদস্য পদ পাইয়ে দেওয়ার নামে কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে। সেই মামলাতেই এ দিন তাঁকে কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পশ্চিম বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। ৯ সেপ্টেম্বর মুকুলবাবুকে প্রথম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পুলিশ জানায়, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক যুবকের কাছ থেকে কয়েক দফায় কমবেশি ৭০ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সরশুনা থানায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই যুবক মুকুলবাবু-সহ চার জনের বিরুদ্ধে ওই টাকা নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। গত মাসে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে সরশুনা থানার পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁরা জামিনও পান। অভিযুক্ত হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে মামলা দায়ের করেন মুকুলবাবু। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, ৫ নভেম্বর পর্যন্ত মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না।
এ দিন বেলা ২টো নাগাদ দুই আইনজীবী প্রশান্ত মজুমদার ও শুভাশিস দাশগুপ্তকে নিয়ে ঠাকুরপুকুর থানায় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার নবকুমার গুপ্তের কার্যালয়ে ঢোকেন মুকুলবাবু। আইনজীবীদের অবশ্য জিজ্ঞাসাবাদের সময় থাকতে দেওয়া হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সন্তু যাঁদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁদের তিনি চেনেন কি না, চিনলে কীভাবে চেনেন তা এ দিন ফের জানতে চাওয়া হয় মুকুলবাবুর কাছে। তাঁকে যা যা জিজ্ঞাসা করা হয় এবং তিনি যা জবাব দিয়েছেন, তার সবটাই ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়।
বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের কার্যালয় থেকে বেরোন মুকুলবাবু। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, অভিযোগকারী সন্তুর অভিযোগ মুকুলবাবুই সব অনৈতিক কাজ করেছেন। মুকুলবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগের তদন্ত হবে।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অনৈতিক কাজের গুরুঠাকুর তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসে রয়েছেন। ডেলোতে বসে সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে বৈঠক করলেন। আর কলকাতায় বললেন, সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে তাঁর কোনও বৈঠক হয়নি।’’
রাজ্যের মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘‘যিনি নিজেই নানা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। তাঁরমুখে অন্য কারও সম্পর্কে, বিশেষত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে অনৈতিক কাজের অভিযোগ শোভাও পায় না, ধোপেও টেকে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়কে কাজের সুযোগ না দিলে তিনি আজ কোথায় থাকতেন?’’