অভিষেকের অধিবেশন শিবিরে যাতে হাতি, হায়না, হনুমান, সাপ কিংবা বোলতা, মৌমাছি অতর্কিতে হানা না দেয়, সে জন্য নেওয়া হচ্ছে গুচ্ছ ব্যবস্থা। ফাইল চিত্র।
‘নব জোয়ারে’ তৃণমূলের দ্বন্দ্ব, হাতাহাতি দেখা গিয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্নবাণও রোজ সামলাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে জঙ্গলমহলে অভিষেকের কর্মসূচিতে চ্যালেঞ্জ কিন্তু বন্যপ্রাণীও।
‘জ়েড প্লাস’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জেলায় জেলায় তাঁর রাত্রিবাসের জায়গায় তাই থাকছে কড়া পুলিশি পাহারা। সেই পুলিশই এখন চিন্তিত বন্যপ্রাণী নিয়ে। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে বৃহস্পতিবার অভিষেকের অধিবেশন শিবিরে যাতে হাতি, হায়না, হনুমান, সাপ কিংবা বোলতা, মৌমাছি অতর্কিতে হানা না দেয়, সে জন্য নেওয়া হচ্ছে গুচ্ছ ব্যবস্থা।
বান্দোয়ানের শালতলা মাঠে, যেখানে অভিষেকের রাত্রিবাসের কথা, সেখান থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে ঝাড়খণ্ডে মাঝেমধ্যে মাওবাদী গতিবিধির খবর মেলে। কিন্তু তার থেকেও কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে বড় কয়েকটি জঙ্গল বেশি ভাবাচ্ছে পুলিশকর্তাদের। রবিবার সন্ধ্যায় বান্দোয়ান ব্লক অফিসে জেলা প্রশাসনের কর্তারা এবং তৃণমূল নেতৃত্ব বৈঠকে বসেন। কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, জঙ্গল থেকে হায়না, হনুমান, বুনো শুয়োর শিবিরে ঢুকতে পারে। গরমে সাপের উপদ্রবের কথাও ওঠে। বান্দোয়ানকে ঘিরে থাকা দলমার হাতিদের চারটি করিডরের কথাও কেউ কেউ তোলেন।
সে সব মাথায় রেখেই প্রস্তুতি সারছে বন দফতর। বান্দোয়ানে এ মুহূর্তে হাতি না থাকলেও যৌথ বন পরিচালন কমিটির সদস্যদের নজর রাখতে বলা হয়েছে। লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে হাতি রয়েছে কি না, নিয়মিত খবর নেওয়া হচ্ছে। হাতি চলে এলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় হুলা পার্টির সদস্যদেরও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
শিবিরের মাঠ বোলতা-মুক্ত করতেও বলা হয়েছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় লেলহে মাছিরা (বড় মৌমাছি) ঝাঁকে ঝাঁকেহানা দেয়। তা ছাড়া, অধিবেশন স্থলে রান্নার গন্ধে আচমকা যদি হনুমান হানা দেয়! বাঁকুড়া থেকে ঘুমপাড়ানি শিকারিদের দলকে এনে তাই প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। হনুমান ধরতে খাঁচাও রাখা হয়েছে।
সাপকে কাবু করতে থাকছে ব্লিচিং, কার্বোলিক অ্যাসিড ও স্নেক ক্যাচার। সোমবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে যেখানে অধিবেশন হয়, সেখানেও কাছেই জঙ্গল। এ দিন স্নেক ক্যাচার নিয়ে বনকর্মীরা তাঁবু পরীক্ষা করেন। এলাকায় হাতি না থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে শিবির পাহারা দিচ্ছেন এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীরা।
এ নিয়ে পুলিশ বা বন দফতর মন্তব্য করেনি। তবে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘বান্দোয়ানকে ঘিরে জঙ্গল রয়েছে। তাই পুলিশ-প্রশাসন ও বন দফতর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’