জলমগ্ন এলাকার চাষিদের বিনামূল্যে বীজ ধান দেওয়া হবে।—ফাইল চিত্র।
আচমকা পুলিশ দেখে সকলে থ! ধান বিক্রির লাইনে দাঁড়ানো চাষিদের পুলিশ নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতেই শুরু হই-হট্টগোল। লাইন থেকে দুই যুবক ছিটকে বেরিয়ে দে দৌড়। পুলিশ ধাওয়া করার আগেই তারা পগার পার। তাদের আনা ধান পড়ে রইল কিসান মান্ডির মাঠে।
বৃহস্পতিবার শাসনের কেমিয়া খামারপাড়ার ঘটনা। পু়লিশ ওই ধান বাজেয়াপ্ত করেছে। শুধু কেমিয়া-খামারপাড়া নয়, ফড়েরাজ বন্ধ করতে এ দিন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে শুরু হয় পুলিশি ধরপাকড়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম দিনেই ৫২৭ বস্তা ধান বাজেয়াপ্ত হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে এক জন। আটক তিন।
ফড়েদের ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই কড়া পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৈঠকে ঠিক হয়, প্রতিটি সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে পুলিশি নজরদারি থাকবে। থাকবেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের অধিকারিকও।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘ঠিক হয়েছে, সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে।’’ কিন্তু ইতিমধ্যেই অনেক ফড়ে চাষিদের থেকে কম দামে ধান কিনে সরকারি দরে বেচে দিয়েছে বলে অভিযোগ। অন্তরা জানান, বিক্রেতাদের নাম-ঠিকানা পরীক্ষা করে দেখা হবে। অপরাধীরা পার পাবে না। বারাসত পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে পুলিশ পিকেট রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রগুলিতে নিয়মিত টহল দেবে পুলিশ।
এ দিন আমডাঙার বোদাই এলাকা থেকে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তারা সরকারি কেন্দ্রে ২০০ বস্তা ধান বিক্রি করতে এসেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাদের জমি নেই। ধান তারা কোথা থেকে পায়, তার সদুত্তরও মেলেনি। আটক দু’জন স্বীকার করেছে, এক বস্তা (৬০ কেজি) ধান তারা চাষিদের কাছ থেকে ৮৯০ টাকায় কিনেছিল। সহায়ক মূল্য অনুযায়ী বস্তাপিছু তারা ১০২০ টাকা পেত। এ দিন বনগাঁতেও পুলিশ একটি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে তাপস মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে ৩২৭ বস্তা ধান বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সে ৯০০ টাকায় এক বস্তা ধান কিনে তা ১০২০ টাকায় বেচেছে।