ভাতারে আক্রান্ত ওসি মিঠুন ঘোষ। সোমবার উদিত সিংহের তোলা ছবি।
বর্ধমানে ফের আক্রান্ত পুলিশ। রায়না, আউশগ্রামের পরে এ বার ভাতারে।
আগুনে পুড়ে এক তরুণীর মৃত্যুর পরে তাঁর ডাককর্মী স্বামীকে ধরে মারছিল জনতা। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে ইট উড়ে আসতে থাকে। ভাতার থানার ওসি মিঠুন ঘোষ-সহ তিন জন জখম হন। ওসির কানের পাশে চারটি সেলাই পড়েছে। এক পুলিশকর্মী বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ভাতারের ওরগ্রাম এলাকায় সুতপা ঘোষ (২১) নামে এক বধূ অগ্নিদগ্ধ হন। মাত্র ছ’মাস আগে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কী করে তিনি পুড়ে গেলেন তা জানতে চেয়েও সদুত্তর পাননি প্রতিবেশীরা। সুতপার শ্বশুর কার্তিক ঘোষ ও শাশুড়ি বাসন্তী তাঁকে নিয়ে গাড়িতে বর্ধমানের দিকে রওনা দিয়েছিলেন। পথে সুতপা মারা গেলে বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের গেটে তাঁরা গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ।
এই খবর গ্রামে পৌঁছতেই স্থানীয় লোকজন সুতপার স্বামী, গ্রামের ডাকঘরের কর্মী সুদীপকে ধরে রাস্তায় এনে মারধর শুরু করে। তিনি বাড়িতে ঢুকে পড়লে বেশ কিছু লোক ভিতরে ঢুকে মারধর, ভাঙচুর, লুঠপাট করতে থাকে। বাড়ির এক দিকে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওসি কয়েক জন পুলিশকর্মীকে নিয়ে সুদীপকে বাঁচাতে ঢুকে ঘেরাও হয়ে যান। তাঁদের লক্ষ করে জনতা ইট ছুড়তে থাকে। লাঠির বাড়িও মারে। পরে বর্ধমান পুলিশ লাইন থেকে বাহিনী গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। সুদীপকে বর্ধমান থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সুতপাদের বাড়ি মঙ্গলকোটের ঘোষপাড়ায়। তাঁর বাবা প্রভাকর ঘোষ বলেন, ‘‘মেয়ে দুপুর ১২টার সময়ে ফোন করে নির্যাতনের কথা বলল। আর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিপদের খবর পেলাম।” তাঁদের অভিযোগ, শাশুড়ি নানা ভাবে সুতপাকে নির্যাতন করতেন। তিনতলা বাড়ির প্রতিটি ঘর সাফ করানো হত। রান্নাও করতে হত। এরই মধ্যে পড়ে গুসকরা কলেজ থেকে স্নাতক হন সুতপা। তবে রাত পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। রাতে বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “আমরা আইনমাফিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।”