ভাঙড়ে অশান্তির ছবি। — নিজস্ব চিত্র।
সংশোধিত ওয়াকফ আইন ঘিরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে বিক্ষোভ এবং ভাঙচুরের ঘটনায় আরও সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উত্তর কাশীপুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। হাতিশালা থেকে ধরা পড়েছেন আরও তিন জন। ফলে সব মিলিয়ে ওই ঘটনায় মোট গ্রেফতারির সংখ্যা দাঁড়াল ১৬। বাকি অভিযুক্তদেরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
ভাঙড়ে পুলিশের উপরে আক্রমণ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার ঘটনার তদন্তে নেমে আগেই ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ধৃতদের অধিকাংশের বাড়ি উত্তর কাশীপুর থানা এলাকায়। এক জন চন্দনেশ্বর থেকে ধরা পড়েন। এ ছাড়া, ৩০ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। বুধবার তাঁদের মধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে খুনের চেষ্টা, অবৈধ জমায়েত, সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। বুধবারই তাঁদের বারুইপুর আদালতে তোলা হবে।
ভাঙড়ের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি মামলা রুজু করা হয়েছে। সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় সোমবার কলকাতার রামলীলা ময়দানে একটি প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ওই কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁদের গাড়ি আটকায়। তৈরি হয় ক্ষোভ এবং উত্তেজনার পরিস্থিতি। অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধেরা। সোমবার দুপুরের ওই ঘটনার পর থেকেই পদক্ষেপ করে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে ভাঙড়ের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। রাতে কলকাতা পুলিশের তরফে সমাজমাধ্যমে জানানো হয়, ভাঙড়ের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলাও দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকে কোনও রকম গুজবে কান না-দেওয়ার পরামর্শ দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে সতর্ক করে দেওয়া হয়, কেউ মিথ্যা তথ্য ছড়ালে কড়া আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
নয়া ওয়াকফ আইন বাতিলের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদ। প্রতিবাদ-মিছিল হয়েছে কলকাতাতেও। আইএসএফ কর্মীদের দাবি, তাঁরা রামলীলা ময়দানের সেই কর্মসূচিতেই যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সেখানে ভাঙড়, মিনাখাঁ এবং সন্দেশখালির আইএসএফ কর্মী-সমর্থকেরা ছিলেন। কিন্তু বাসন্তী হাইওয়ের উপর বৈরামপুরের কাছে তাঁদের গাড়ি আটকে দেয় পুলিশ। এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাস্তা অবরোধ করেন আইএসএফ কর্মীরা। তা নিয়েই সোমবার দুপুরে উত্তেজনা ছড়ায় ভাঙড়ের শোনপুরে। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশের অন্তত পাঁচটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইট মেরে ভাঙা হয়েছে কলকাতা পুলিশের গাড়ির কাচ। ভাঙচুর চালানো হয়েছে প্রিজ়ন ভ্যানেও। ভাঙচুরের পর সেটিকে রাস্তায় উল্টে দেওয়া হয়।