বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
আবাস যোজনা নিয়ে এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। অনেক সময়েই সেই বিক্ষোভের নিশানা হচ্ছেন তৃণমূলে পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্য বা নেতারা। এই পরিস্থিতিতে সেই ক্ষোভকে কাজে লাগাতেই এ দিন সক্রিয় হন বিজেপির নেতারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিন ফের বলেন, যাঁরা ঘর পাননি, আদালতে মামলা করুন, বিজেপি সাহায্য করবে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার আবার আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলে মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
মঙ্গলবার শুভেন্দুর সভা ছিল মালদহের গাজলে। তার পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের শহর বালুরঘাটেও সভা করেন শুভেন্দু। গাজলে তিনি সুকান্তের প্রসঙ্গ বিশেষ তোলেননি। তবে বালুরঘাটে তাঁর উল্লেখ করে বলেন, ‘‘(আবাস যোজনা প্রসঙ্গে) আমি আর সুকান্ত মিলে বড় চোরেদের তাড়াব। গ্রামে ছোট চোরদের ভো-কাট্টা করার দায়িত্ব আপনাদের। ঘর দিতে টাকা নেওয়া চোরেদের তাড়ান।’’ তার আগেই তিনি গাজলের সভায় বলেছেন, ‘‘তালিকা এখনও ত্রুটিমুক্ত নয়। যাঁরা ঘর পাননি, জনস্বার্থে আদালতে মামলা করুন। বিজেপি আপনাকে সাহায্য করবে।’’
শুভেন্দুর গাজলের সভাতেই চলল আবাস যোজনা প্রকল্পের আবেদনপত্র পূরণের কাজ। বেদনপত্র জমাও নেন বিজেপির নেতারা। সে জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। সভা শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরেও সেই আবেদনপত্র জমা নেওয়ার পর্ব চলে। গাজলের রানিগঞ্জের বাসিন্দা রানু মণ্ডল বর্মণ বলেন, “মাটির বাড়ি থাকলেও সরকারি ঘর পাইনি। শুভেন্দুর সভায় আবাস যোজনার আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। বিজেপি বলেছে, তাঁর কাছে আবেদনপত্র জমা দিলে তিনি আমাদের ঘর দেবেন।”
এই ভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার বিষয়টিকে বেআইনি বলেছেন কুণাল। তৃণমূল মুখপাত্র এ দিন স্পষ্ট বলেন, ‘‘সভায় লোক আসছে না। তাই আবাস যোজনার ফর্ম বিলির কথা বলে ভিড় করতে চাইছে। এটা শুধু বেআইনি কাজ-ই নয়, মানুষকে মিথ্যাও বলা হচ্ছে।’’ বাঁকুড়ার সিমলাপালের এক জনসংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারও এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা নিয়ে কেলেঙ্কারি করেছে। মানুষ এর বিরুদ্ধ যে ভাবে নেমেছেন, তাতে আগামী দিনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে হতে পারে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে কথা বললেই তৃণমূলকে ধোলাই দিয়ে দিয়ে গ্রাম থেকে বিদায় করুন।’’
পাল্টা জবাবে অবশ্য পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, “২০২১-এর বিধানসভা ভোটে তো রাজ্যের মানুষের গণতন্ত্রের ধোলাই তাঁরা দেখেছেন।”