Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাস-প্রকল্প দেখতে ফের কেন্দ্রীয় দল, পাল্টা তোপ মুখ্যমন্ত্রীরও

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক পঞ্চায়েত দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের দু’টি দলকে এক-দু’দিনের মধ্যেই পাঠানো হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং মালদহে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:০২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

কেন্দ্র এবং কেন্দ্রীয় দলের সুপারিশ মেনে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সংশোধনমূলক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। তবে প্রকল্পে বরাদ্দ চালু করেছে কেন্দ্র। নতুন করে বাড়ি তৈরির ‘কোটা’ এবং বরাদ্দ চালু হয়েছে। উপভোক্তাদের সংশোধিত তালিকার ভিত্তিতে চূড়ান্ত অনুমোদনের কাজও শেষ। এ বার শুরু হচ্ছে বাড়ি তৈরির কাজ। এই অবস্থায় নজরদারি জারি রাখার বার্তা দিয়ে ফের পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। তার পাল্টা বুধবারই একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ চেয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও কেন্দ্রীয় দলের আগমনকে ‘রাজনৈতিক পর্যটকদের সফর’ বলে কটাক্ষ করেছে।

Advertisement

কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক পঞ্চায়েত দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের দু’টি দলকে এক-দু’দিনের মধ্যেই পাঠানো হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং মালদহে। এক একটি দলে তিন জন করে সিনিয়র অফিসার থাকবেন। তাঁদের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের দলে থাকবেন মন্ত্রকের এক জন অধিকর্তা, আন্ডার সেক্রেটারি এবং সংখ্যাতত্ত্ব-অফিসার। প্রকল্প এলাকাগুলির যে কোনও জায়গায় কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। দরকারে নথিপত্রও যাচাই করতে পারেন তাঁরা। প্রশাসনিক সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, আগের দফায় কেন্দ্রীয় দলের সুপারিশ অনুযায়ী যাবতীয় সংশোধনমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। কেন্দ্রের কড়া বিধি মেনে উপভোক্তা বাছাই এবং তাঁদের অনুমোদন করেছে রাজ্য। ফলে, কেন্দ্রীয় দল এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই পারে।

সাগর মেলার প্রস্তুতি দেখতে গঙ্গাসাগরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এ দিন তাঁর প্রতিক্রিয়া, “রাজনীতিতে আমি নেই। কপিল মুনির আশ্রমে আমি দাঁড়িয়ে আছি। রাজনীতি না করে বলো, একশো দিনের টাকা দিতে!”

Advertisement

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দল পাঠানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে দাবি করেছেন, ‘‘দুর্নীতিবাজ, চোর যারা গরিবকে বঞ্চনা করেছে, তাদের জেলে যাওয়া উচিত!’’ মুখ্যমন্ত্রীর টাকা চাওয়ার দাবিকে কটাক্ষ করে ধনেখালির দলীয় সভায় এ দিনই শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘আসছে দিদির দূত। ওরা সবাই তৃণমূলের ভূত! সাড়ে তিন লক্ষ লোককে দেওয়ার জন্য টাকা চাই, ওঁর একটাই ‘এজেন্ডা’। যখনই প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা হয়, শুধু ছিঁচকাঁদুনি, টাকা চাই, টাকা!’’

রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের মন্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক পর্যটকেরা সফরে আসছেন। কেন্দ্রীয় দলকে বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগাচ্ছে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘রাজ্যে এসে ওঁরা সকলের কথা শুনলে বিশদে বলা যাবে। আবাস যোজনার যে সব শর্ত আছে, তা নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে।

এগুলোরও সংশোধন দরকার।’’ তৃণমূলের তরফে রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও পার্থ ভৌমিকের আজ, বৃহস্পতিবারই আবাস যোজনা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা।গত বছরই বেশ কয়েক দফায় ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-সহ কেন্দ্রীয় একাধিক প্রকল্প খতিয়ে দেখেছিল তারা। ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরে প্রকল্পগুলিতে বন্ধ থাকা বরাদ্দ চালু করতে কী ধরনের সংশোধন প্রয়োজন, তারও সুপারিশ ছিল তাদের তরফে। যেগুলি পূরণ করে তবে বরাদ্দ ফের পেতে শুরু করেছে রাজ্য। আবাসের মূল তালিকা থেকে বাদও দিতে হয়েছে প্রায় ১৪ লক্ষ নাম। এই অবস্থায় নতুন করে কেন্দ্রীয় দলের আসাকে হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না প্রশাসনিক মহল। এক কর্তার কথায়, “উপভোক্তা-তালিকা, প্রথম কিস্তির টাকা ছাড়ার নথি বা বাড়ি তৈরির কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে পারে কেন্দ্রীয় দল। কেন্দ্র যে চাপ রেখে দিতে চাইছে, তা বোঝা যাচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement